র ঙ বে র ঙ-বলবে কথা গাড়িও

ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে আমরা একে অপরের সঙ্গে নানা ভাষায় কথা বলি। অন্য প্রাণীগুলোও তাদের ভাষায় সেটা করে। কিন্তু গাড়ির সঙ্গে গাড়ির কথা, কেউ কখনও শুনেছেন? অসাধ্য এ কাজটিই সাধন করতে যাচ্ছেন ইতালির বোলোনা ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। তারা বলেছেন, গবেষণা সফল হলে সহজেই এক গাড়ি আরেক গাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ওই রাস্তায় থাকা অন্য গাড়িটাও খবর পেয়ে


যাবে। আর এর ফলে পেছনে থাকা গাড়িগুলো রাস্তা পরিবর্তন করে অন্যদিকে চলে যেতে পারবে কিংবা বিকল্প কোনো উপায় খুঁজে বের করে নিতে পারবে। গবেষকরা ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার তৈরি করে ফেলেছেন। এ সফটওয়্যারের মাধ্যমেই এক গাড়ি অন্য গাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করবে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে চলন্ত পথে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন তথ্যও সংরক্ষণ করতে পারবে। নিজের বিভিন্ন ত্রুটি বের করতে সক্ষম হবে। গবেষকরা এ গাড়িটির নাম দিয়েছেন 'টকিং কার'। সফটওয়্যারটি পরীক্ষার জন্য কয়েকটি গাড়িতে জুড়েও দেওয়া হয়েছে। এ প্রযুক্তিকে বলা হয় টেলিমেটিক্স। এতে টেলিকমিউনিকেশন এবং ইনফরমেটিক্সের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে রাডারের সাহায্যে একটি গাড়ি আগে থেকেই জানতে পারে সামনে কোনো দুর্ঘটনা হয়েছে কি-না। আর সেটি সম্ভব তখনই, যখন গাড়িটি দুর্ঘটনা প্রায় কাছাকাছি স্থানে থাকে। এর ফলে শুধু দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। তবে এ গবেষণা সফল হলে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই গাড়ি তার সামনের দুর্ঘটনার কথা জানতে পারবে। এ পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি গাড়িতে ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির সংযোগ থাকবে। ফলে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে তার অ্যাক্সেলারেশন সেন্সরে পরিবর্তন আসবে। আর এ তথ্য সঙ্গে সঙ্গে পেছনের গাড়িগুলো জেনে যাবে।
মজার ব্যাপার হলো, গাড়িটি যখন কোনো দুর্ঘটনায় পড়তে যাবে, তখন এক ধরনের শব্দ হবে। এ শব্দের মাধ্যমে চালক খুব সহজেই বুঝতে পারবে কি ঘটতে যাচ্ছে। তখন সহজেই দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে। শুধু কি তাই! রাস্তায় কোথাও কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলে গাড়িটি তা নিজের মেমোরিতে ধারণ করে রাখবে এবং সঙ্গে সঙ্গে চালককে সতর্ক করে দিবে। গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক গুস্তাভো মার্ফিয়া বলেন, এ ডিভাইসটি গাড়ির ড্যাশবোর্ডে লাগানো যাবে। তাছাড়া ওয়াই-ফাই আছে এমন স্মার্টফোনেও সহজে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। এ ধরনের একেকটি ডিভাইসের দাম পড়বে ২৫ পাউন্ড। তবে এটা খুব জোর দিয়েই বলা যায়, এ গবেষণা সফল হলে স্মার্ট সিটি অর্থাৎ আধুনিক শহর তৈরির কাজ আরও এগিয়ে যাবে। সেই শহরটিতে সবকিছু চলবে কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও প্রত্যাশা করছি সেই শুভ দিনটির।
প্রদীপ সাহা

No comments

Powered by Blogger.