নারায়ণগঞ্জে সমবায় মেলা-বিনা মূল্যে দোকান বরাদ্দ দিয়ে পরে টাকা দাবি

নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ জিয়া হল মিলনায়তনে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মেলা নিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে হঠকারিতার অভিযোগ উঠেছে। মেলায় স্টল নেওয়া বিভিন্ন সমবায় প্রতিষ্ঠানের লোকজনের অভিযোগ, মেলা শুরুর আগে মেলায় বরাদ্দ দোকানের জন্য তাদের কোনো প্রকার টাকা দেওয়ার কথা না বললেও মেলার শেষ দিন গতকাল শনিবার আয়োজক সমবায় অফিস ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রতিটি দোকান থেকে তিন হাজার করে টাকা


দাবি করছেন। টাকা না দিলে স্টলে থাকা মালামাল আটকে রাখা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে সমবায়ের লোকজন। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মেলায় অংশ নেওয়া সমবায়ীরা।জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর শুরু হয় পক্ষকালব্যাপী এ মেলা। জেলা সমবায় অফিসের উদ্যোগে এ মেলায় বিভিন্ন সরকারি অধিদপ্তরের মোট ২২টি স্টল ছিল। এর মধ্যে সমবায় অফিসের ১১টি, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পাঁচটি, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের দুটি, পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের দুটি স্টল ছিল।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সংগঠক মরিয়ম আক্তার লতাসহ আরো কয়েকটি স্টলের মালিক অভিযোগ করেন, গতকাল শনিবার ছিল মেলার শেষ দিন। এদিন সকাল থেকেই জেলা সমবায় কর্মকর্তা নূরুল আলম ও জেলা প্রশাসনের নাজির প্রাণকৃষ্ণ মেলায় এসে স্টল মালিকদের কাছে তিন হাজার করে টাকা চাইতে থাকেন। টাকা না দিলে স্টলে থাকা মালামাল আটকে দেবেন বলেও জানিয়ে দেন এ দুই সরকারি কর্মকর্তা।
লতা জানান, মেলা শুরুর আগে আয়োজক সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা আয়োজন নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে তাঁরা বিনা মূল্যে স্টল বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেন।
লতা বলেন, 'বিনা মূল্যে স্টল দেওয়ার ঘোষণার পর আমরাসহ অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে বিনা মূল্যে স্টল বরাদ্দ নিয়েছি। ১৯ নভেম্বর থেকে মেলা চলাকালীন আমরা প্রতিদিন মেলার নিরাপত্তাপ্রহরীসহ অন্যদের খরচ বহন করেছি। কিন্তু গত কয়েক দিন ও শনিবার সমবায় কর্মকর্তা নূরুল আলম এবং জেলা প্রশাসনের নাজির প্রাণকৃষ্ণ এসে আমাদের কাছে তিন হাজার টাকা করে দোকান ভাড়া বাবদ দাবি করেন। টাকা না দিলে মালামাল আটকে রাখার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি তাঁদের টাকা দেব না বলে জানালে তাঁরা আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও টাকা দিয়ে যেতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন।'
লতার বক্তব্য, মেলা আয়োজন নিয়ে শেষ মুহূর্তে প্রশাসন ও সমবায় অফিস হঠকারিতা করেছে।
এ ব্যাপারে জেলা সমবায় অফিসার নূরুল আলম জানান, তাঁরা এবার প্রথমবারের মতো মেলার আয়োজন করেছেন। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় তাঁরা অনেক হিসাব আগাম করতে পারেননি। মেলার জন্য সরকারি যে অর্থ বরাদ্দ ছিল, তার সবটুকুই খরচ হয়ে গেছে মেলার স্টল, প্রচারণা, ডেকোরেটর ইত্যাদি কাজে। কিন্তু বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে না পারায় এ অর্থ স্টল মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে। তবে টাকা দিতে ব্যর্থ হলে স্টল মালিকদের মালামাল আটকে দেওয়ার কথা অস্বীকার করে নূরুল আলম বলেন, কেউ টাকা দিতে না পারলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এদিকে জেলা নাজির কর্মকর্তা প্রাণকৃষ্ণ বলেছেন, স্টল থেকে টাকা চাওয়ার ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি বলেন, বিষয়টি সমবায় অফিসের। তারা মেলা আয়োজন করেছে, তারাই ভালো বলতে পারবে।

No comments

Powered by Blogger.