গুলিস্তানে বাটা শোরুমে ভয়াবহ আগুন

রাজধানীর গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাটা শোরুমে ভয়াবহ অগি্নকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত ১টার দিকে লাগা এ আগুন গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে ৪টায় নেভাতে সক্ষম হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। প্রায় ১৫ ঘণ্টার আগুনে সাত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই শোরুমটির কর্মকর্তারা। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও আগুন লাগার কারণ নিরূপণ করতে পারেননি। এতে কোনো হতাহতের


ঘটনা না ঘটলেও আশপাশের মার্কেটগুলোর ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার কারণ উদ্ঘাটনে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক (অপারেশন) ভরত চন্দ্র বিশ্বাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশেই বাটাবাজার নামে বাটা শু কোম্পানির বিশাল এ শোরুম। তিনতলা ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় বিক্রয়কেন্দ্র ও তৃতীয় তলায় প্রতিষ্ঠানটির গুদাম ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, দ্বিতীয় বা তৃতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। রাতেই ফায়ার সার্ভিসের ডিজি, র‌্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। আওয়ামী যুবলীগ কার্যালয়ের অফিস সহকারী প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ শাহীন ও সৈনিক লীগ কার্যালয়ের কেয়ারটেকার প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার মাঝি সমকালকে জানান, রাত ১টার দিকে প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধে তাদের ঘুম ভাঙে। দৌড়ে ছাদে গিয়ে দেখেন বাটা শোরুম থেকে ধোঁয়া বেরুচ্ছে। রাতে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল হাসান সমকালকে বলেন, বাটা শোরুম থেকে ব্যাপক ধোঁয়া বের হতে দেখে ফায়ার সার্ভিসে জানানো হয়।
শুক্রবার রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাটা শোরুমের দ্বিতীয় তলা দিয়ে ব্যাপক কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ফায়ার কর্মীরা ধোঁয়ার কারণে ভেতরে ঢুকতে পারছেন না। রাত ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের রিজার্ভ পানি শেষ হয়ে গেলে ওসমানী উদ্যানের লেক থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। ভোর ৫টার দিকে আগুন নিভিয়ে ফেলা হলেও এর কিছুক্ষণ পরই আবার ব্যাপক ধোঁয়া বের হতে থাকে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) মেজর মাহবুব সমকালকে বলেন, তিনতলা ভবনটি তালাবদ্ধ থাকায় শাটার ও দেয়াল কেটে আগুন নেভাতে সময় লেগে যায়।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে এ আগুন লাগতে পারে। তবে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কি-না বা নাশকতার বিষয়টিও তারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এসব কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বাটা কোম্পানির ওই শোরুমটির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, পুরো ভবনটিতে প্রায় চার কোটি টাকার জুতা ছিল। তবে সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি টাকা হতে পারে। তারাও আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা করছেন।

No comments

Powered by Blogger.