পাল্টাপাল্টি ইট নিক্ষেপে আহত ১০-চট্টগ্রামে ৩০ দোকানে ছাত্রলীগের ভাঙচুর, হকারদের বিক্ষোভ

ট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় গতকাল শুক্রবার অন্তত ৩০টি অস্থায়ী দোকানে ভাঙচুর করেছেন সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এর জের ধরে হকারদের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। হকাররা সড়কের ওপর আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ করলে নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকায় সন্ধ্যার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর)


আমেনা বেগম বলেছেন, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নিউমার্কেটের সামনে সিটি কলেজের দু-তিনজন ছাত্র একটি দোকানে প্যান্ট কিনতে যান। এ সময় হকারদের সঙ্গে তাঁদের বাগিবতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাঁরা এক ছাত্রকে মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানান, ছাত্রকে মারধর করার খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পর ৩০-৪০ জন যুবক এসে নিউমার্কেট থেকে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল পর্যন্ত অন্তত ২০টি দোকানে ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট নাজমুল আমিন প্রথম আলোকে জানান, প্রথম দফা ভাঙচুরের পর গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে হকাররা একজন ছাত্রকে বেঁধে রেখেছেন। এরপর সন্ধ্যা সাতটার দিকে কলেজের শ খানেক ছাত্র এসে দোকানগুলোয় আবার ভাঙচুর চালান।
হকাররা অভিযোগ করেন, ছাত্ররা অনেক দোকান থেকে মালামাল নিয়ে রাস্তায় ছুড়ে ফেলেন। কোনো কোনো দোকান থেকে তাঁরা মালামাল লুটও করেন। হকাররা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এতে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নেজাম উদ্দিনসহ ১০ জন আহত হন।
একপর্যায়ে হকাররা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে হকার্স মার্কেটের সামনে ও স্টেশন রোডে অবরোধ সৃষ্টি করেন। তাঁরা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
অন্যদিকে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে সদরঘাট কালীবাড়ি সড়কে অবস্থান নেন। তাঁরাও স্লোগান দিতে থাকেন। পরে কলেজের সামনে তাঁরা সমাবেশ করেন। দুই পক্ষের মাঝখানে এবং প্রতিটি সড়কমুখে পুলিশ অবস্থান নেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় পাঁচ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, ‘আমাদের ৩০-৪০টি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ধরনের ভাঙচুর অনাকাঙ্ক্ষিত।’ তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে কলেজ ছাত্রসংসদের সহসভাপতি আবু তাহেরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহ উদ্দিন গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে জানান, বিষয়টি সমাধানে রাতেই (গতকাল রাতে) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বৈঠকে বসার কথা। প্রয়োজনে তাঁরা হকার নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.