আপনার কি ইট্টুও চক্ষুলজ্জা নাই’

স্যার, কয়দিন আগেই আপনারে দুইটা বড় কাজ কইরা দিলাম। আইজকাই আমারে ধইরা হাতে হ্যান্ডকাফ পরাইয়া দিলেন? আপনার কি ইট্টুও চক্ষুলজ্জা নাই।’ ‘আরে চুপ কর হারামজাদা, আইজির নির্দেশে অভিযান চলছে। তোরে ছাইড়া কি চাকরি হারামু নাকি?’ বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর অদূরে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হোটেলে বসে এমন কথোপকথন হয় সাভার থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কাউসার মাতাব্বর আর সাভার নামাবাজারের বাসিন্দা


আমিনুর রহমানের সঙ্গে। অথচ গতকাল শুক্রবার থানায় গিয়ে আমিনুরের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহামেদ গতকাল দুপুরে হাজত রেজিস্টার ঘেঁটে জানান, ওই নামে কোনো আসামি থানাহাজতে নেই।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এএসআই কাউসার মাতাব্বর সাভারের ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে শামীম (২২) ও আমিনুর রহমান (২৫) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হোটেলে। সেখানে তাঁরা রাতের খাবার খান। এ সময় ঘটনাক্রমে প্রথম আলোর এ প্রতিবেদকও ওই হোটেলে ছিলেন।
আসামিদের হাতে হাতকড়া দেখে কিসের আসামি জানতে চাইলে এএসআই কাউসার বলেন, এদের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, তাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর পরপরই আসামি আমিনুর রহমান কথায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘কয়দিন আগেও স্যার আপনারে দুইডা বড় কাজ কইরা দিলাম। আমারে ছাইড়া দ্যান, আমি আপনারে আরও বড় বড় কাজ দিমু।’
বড় কাজ কী? ‘স্যাররে অনেক মাদক উদ্ধার কইরা দিছি।’ বলে আসামি আমিনুর। কথা বলার একপর্যায়ে ছাড়া সম্ভব নয় বলে ওই কর্মকর্তা তাঁদের নিয়ে থানার দিকে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই কর্মকর্তা আমিনুরকে ছেড়ে দিয়ে শামীমকে থানায় নিয়ে যান।
জানতে চাইলে এএসআই কাউসার বলেন, আমিনুরের মাধ্যমে অপরাধীদের ধরার জন্য তাঁর সঙ্গে নাটক করা হয়েছে। আসলে তাঁর নামে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই।
অথচ হোটেলে আলাপকালে আমিনুর বলেছিলেন, একটি মারামারির মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় আদালত থেকে তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ছেড়ে দেওয়া হলেই তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেবেন। আমিনুরের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এএসআই কাউসার বলেন, ‘আমিনুর তো আমার সঙ্গেই আছেন, কাজ শেষ হলেই তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’

No comments

Powered by Blogger.