‘উত্তর কোরিয়ার নীতিতে পরিবর্তন আসবে না’

তুন নেতা দায়িত্ব নিলেও উত্তর কোরিয়ার নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছে পিইং ইয়ং। প্রয়াত নেতা কিম জং-ইলের ছোট ছেলে কিম জং-উনকে সর্বোচ্চ নেতা ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিকে আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে দেশটিতে আবার পর্যটক প্রবেশ করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে। প্রতিবছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের একটা সময় দেশটিতে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়।


গতকাল উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ঘোষণায় বলা হয়, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার পুতুল সেনারাসহ বিশ্বের বোকা রাজনীতিবিদদের উচিত হবে না উত্তর কোরিয়ার নীতিতে কোনো পরিবর্তন আশা করা।’ টেলিভিশনে জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের (এনডিসি) একটি বিবৃতির বরাত দিয়ে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণায় আরও বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিউং বাকের প্রশাসনের সঙ্গে কখনোই কোনো সমঝোতায় যাবে না পিয়ং ইয়ং।
ঘোষণায় অভিযোগ করা হয়, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-ইলের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের সময় দক্ষিণ কোরিয়া অপমানজনক আচরণ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে ঘোষণা দেওয়া হয়, ‘আমাদের দুর্ভাগ্যের সময় বিশ্বাসঘাতকেরা যে অপরাধ করেছে, এর সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল ইউনিফিকেশন ইন সিউলের বিশ্লেষক চুং ইয়ং তায়ে বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে উত্তর কোরিয়ায় কোনো পরিবর্তন আশা করা সত্যিকার অর্থেই বোকামি।’ তিনি আরও বলেন, এর আগেও উত্তর কোরিয়া এ ধরনের বার্তা দিয়েছে।
কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, উত্তর কোরিয়ার ঘোষণায় এমন কঠোর বার্তার মানে হলো, তারা বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে দেশটির সন্ধিক্ষণে যাতে কোনো উসকানি না দেওয়া হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের ইয়াং মো জিন বলেন, উত্তর কোরিয়া চায় তাদের নতুন নেতা কিম জং-উনকে দক্ষিণ কোরিয়া স্বাগত জানাবে। আর নীতি পরিবর্তন না করার ঘোষণার মাধ্যমে তারা বিশ্বের প্রতি এই বার্তা দিতে চাইছে যে তাদের অভ্যন্তরীণ নীতি নিয়ে যাতে কেউ নাক না গলায়।
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-ইল ৬৯ বছর বয়সে ১৭ ডিসেম্বর মারা যান। ১৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের শেষ দিন গত বৃহস্পতিবার তাঁর ছোট ছেলে কিম জং-উনকে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এদিকে ১০ জানুয়ারি থেকে দেশটির পর্যটনশিল্প বিদেশি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
চীনভিত্তিক করইয়ো গ্রুপ এক বিবৃতিতে জানায়, কোরিয়ার সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে পর্যটকেরা দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিমন কোকেরেল জানান, প্রতি বছরের মতো এবার উত্তর কোরিয়া তাদের পর্যটনশিল্প কিছুদিন বন্ধ রাখার পর খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। করইয়ো গ্রুপ উত্তর কোরিয়ায় পর্যটক নিয়ে যাওয়ার কাজ করে। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.