বখাটে এড়াতে মাছ-কৌশল

পনি যদি নারী হন আর রাস্তায় বেরোলেই পুরুষের শ্যেনদৃষ্টিতে পড়ে বিব্রত হওয়ার ব্যাপারটি যদি ঘটে থাকে অহরহই, তবে আপনার জন্যই এ টোটকা। ঘর থেকে বেরোতেই আপনার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকা পুরুষ চোখগুলোর দেওয়া অস্বস্তি থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে একটি কৌশল নিতে হবে। না, বিকট মেকাপ করে আপনার চেহারাটির ভূগোল পাল্টে ফেলার দরকার নেই, আপনাকে শুধু আচরণ করতে হবে মাছের মতো। আঁৎকে উঠবেন না,


আপনাকে গায়ের সঙ্গে লেজ আর পাখা লাগাতে হবে না। আপনাকে চলাফেরা করতে হবে বাইরে থেকে দেখতে-শুনতে আপনার চেয়ে ভালো চেহারার কয়েকজন বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে। তাহলে আপনি অস্বস্তিকর চোখগুলোর অত্যাচার থেকে রেহাই পাবেন। ত্রিনিদাদিয়ান গাপ্পি প্রজাতির স্ত্রী মাছেরা পুরুষ মাছদের এমন 'অত্যাচার' থেকে বাঁচতে এ কৌশলই অবলম্বন করে।
এঙ্টোর ও কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ত্রিনিদাদিয়ান গাপ্পি প্রজাতির পুরুষ মাছেরা স্ত্রী
মাছেদের প্রেম নিবেদনসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করায় বেশ বিখ্যাত। আর উঠতে-বসতে এত প্রেম নিবেদনের ঠ্যালায় পড়ে স্ত্রী মাছেরা ঠিকমতো খাবার সংগ্রহ বা শিকারি প্রাণীদের হাত থেকে আত্মরক্ষার মতো কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারে না। গবেষণায় দেখা গেছে, এ যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে স্ত্রী গাপ্পিরা কখনোই একা চলাফেরা করে না। আর সঙ্গী হিসেবে এরা সাধারণত দেখতে নিজেদের চেয়ে আকর্ষণীয় স্ত্রী মাছদের বেছে নেয়। দেখতে বেশি আকর্ষণীয় মাছেদের ভিড়ে খুব সাদামাটা মনে হওয়ায় একটু লাজুক প্রজাতির স্ত্রী মাছেরা পুরুষ মাছেদের ঘ্যানঘ্যানানি থেকে বেঁচে যায়।
গবেষকরা বলছেন, মানুষের সঙ্গে মাছের এ আচরণের বেশ মিল রয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে দেখা যায়, বিভিন্ন চেহারার মেয়েরা দলবেঁধে থাকে। এর কারণ হলো, কেউ কেউ লাজুক প্রকৃতির। তারা উঠতে-বসতে ছেলেদের কাছ থেকে সৌন্দর্যের প্রশংসা ও প্রেম নিবেদনের চেষ্টা পছন্দ করে না। আবার কেউ কেউ নিজের চেহারার 'খুবসুরতি' নিয়ে বেশ গর্বিত এবং এর প্রকাশ ঘটাতে পছন্দ করে। তারা অন্যের কাছ থেকে প্রশংসা ও প্রেম নিবেদনের ব্যাপারটি বেশ উপভোগও করে। সাধারণত এমন ভিন্নতার মেয়েদের মধ্যেই সখ্য বেশি গড়ে ওঠে এবং লাজুক ধরনের মেয়েরা 'হিরোইন' টাইপের ওই বান্ধবীদের নিজেদের ঢাল হিসেবে ভেবে স্বস্তি বোধ করে। তাই তারা নিজেদের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় চেহারার মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে, ধরে রাখে ও তাদের সঙ্গেই চলাফেরা করতে চেষ্টা করে। স্ত্রী গাপ্পি মাছেরাও একই কাজ করে।
অদ্ভুত বা হেঁয়ালি মনে হলেও তত্ত্বটি গবেষণায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। তবে এর মানে এই নয় যে, এ ধরনের যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য এটি কোনো বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকর কৌশল হতে পারে, যা প্রয়োজন তা হলো বাহ্যিক বা শারীরিক সৌন্দর্যকে প্রাধান্য না দিয়ে মনের সৌন্দর্য ও গুণাবলি দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা_তা সে মেয়ে বা ছেলে যে কারো ক্ষেত্রেই হোক। পাশাপাশি কোনো মেয়ের চেহারায় মুগ্ধ হয়ে গেলেও তাকে বিব্রত না করে ছেলেদের উচিত নিজের আবেগ ও চোখ_দুটোই সামলে রাখা। তাহলে হয়তো আর মানুষ হয়ে মাছেদের কাছে সম্মান রক্ষার কৌশল শেখার মতো দুর্ভাগ্য মানুষের হবে না। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, এমএসএনবিসি অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.