মহাসড়ক সংস্কার-বৃষ্টির পানিতেই মিলিয়ে যাবে কেন

ড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশাল-গৌরনদীর ভুরঘাটা পর্যন্ত সংস্কারের কাজ নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগে সংস্কারকাজ সমাপ্ত হওয়ার পরও কিভাবে এই রাস্তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে, তা দেখার কেউ আছে বলে মনে হচ্ছে না। গত ঈদের আগে সারা দেশেই যখন সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা নাজুক পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে, তখন সরকার জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত দেয়।


তারই অংশ হিসেবে ওই রাস্তার জন্য পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এই প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পর্কে শুরুতেই বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। তখনই বলা হয়েছিল যে এত অল্প সময় এবং বর্ষাকালে করা কাজ সড়ক উন্নয়নে সহায়ক হবে না। এর পাশাপাশি দুর্নীতির প্রসঙ্গও এসেছিল। বলা হয়েছিল, জরুরি ভিত্তিতে করার ফলে দুর্নীতির সুযোগও বেড়ে যাবে এসব কাজে। বরিশাল অঞ্চলের সেই রাস্তার বর্তমান অবস্থা দেখে সংগত কারণেই সেই সন্দেহের কথা যে কেউ মনে করতে পারে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওই এলাকার কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদারদের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরতে এমনও বলা হয়েছে যে রাস্তার কোথাও কোথাও গর্ত বালু দিয়ে ভরাট করে সাময়িক গাড়ি চলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু যে মুহূর্তে বৃষ্টি হয়েছে, তখনই সেই বালু সরে গেছে এবং রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। অবশ্য বৃষ্টির দোহাই দিতে কর্তৃপক্ষও কম যায় না। তাদেরও দাবি, তারা যথাযথ কাজ করেছে; কিন্তু বৃষ্টির কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। ৩৮ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারের কাজ করতে সময় নেওয়া হয়েছে ১৭ দিন। তাই জরুরিভিত্তিক কাজ হওয়ার পরও সময় খুবই কম, এমনও বলার সুযোগ নেই। এমন পরিস্থিতিতে সময়ের স্বল্পতার কথা বলার যুক্তি তোলারও সুযোগ কম। ঠিকাদারদের মধ্যে যারা কাজ পায়নি, তাদের দোষারোপ করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাস্তার হাল দেখে এই বক্তব্যও স্বীকার করা যায় না। সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়মুক্তিও হয় না এই বক্তব্যে। বর্ষা আসবে, বৃষ্টি হবে_এটা জানা কথা। প্রশ্ন হচ্ছে, এই স্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তারা কোন কারণে আগেই ব্যবস্থা নেয়নি? এই অভিযোগ থেকে তারা কি মুক্তি পাবে? ঋতুবৈচিত্র্যের কারণেই এখন থেকে বৃষ্টি কমে আসবে। সুতরাং এখন থেকেই যদি পুনরায় রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হয়, তাহলে আগামী ঈদে আবারও মানুষ দুর্ভোগে পড়বে, আর সরকারকে তার খেসারত দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.