বিদ্রোহীদের ব্যবহৃত অস্ত্র আদালতে

০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহীরা যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করেছিল, তা পরে জব্দ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিদ্রোহী জওয়ানদের ব্যবহৃত তিনটি অস্ত্র গতকাল রোববার আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি সাব মেশিনগান একটি রাইফেল ও একটি পিস্তল। মামলার সাক্ষী মেজর মোঃ সুজাউল হক আদালতে ওই অস্ত্র উপস্থাপন করেন।


এদিকে গতকাল আদালতে সুমন সাগর নামে এক আসামি নিজের দোষ স্বীকার করার জন্য আবেদন জানান। ওই সময় আদালত বলেন, মামলার এ পর্যায়ে আবেদনের সুযোগ নেই। সাক্ষীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
পুরান ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় কেন্দ্রীয় কারাগার ও নবকুমার ইনস্টিটিউশন সংলগ্ন আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে সকাল পৌনে ১০টায় হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে একটানা বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত চলে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। আজ সকাল পৌনে ১০টায় আবার আদালত বসবে।
সাক্ষীর বক্তব্যে মেজর সুজাউল হক বলেন, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মেজর জায়েদীসহ নাশতা করি। এর পর মেজর শাহ আলমের সঙ্গে দেখা হয়। তার কাছে জানতে পারি, দরবার এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিজির বক্তব্য শুরু হওয়ার পর সিপাহী মাঈন তার দিকে দৌড়ে গিয়ে অস্ত্র তাক করে। ওই সময় দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পাই। এ সময় ৩০-৩৫ জন সশস্ত্র বিডিআর সদস্য দৌড়ে দরবার হলের দিকে আসছিল। তারা কেউ কেউ দরবার হলের দিকে গুলি করে। আমি আত্মরক্ষার্থে একটি গাছের আড়ালে যাই। সশস্ত্র বিডিআর সদস্যদের মধ্যে সিপাহী মনজুর, ল্যান্সনায়েক হারুন, হাবিলদার খলিলুর রহমান, সিপাহী সানোয়ার, ল্যান্সনায়েক মোফাজ্জল, হাবিলদার সেলিম ও সিপাহী দেলোয়ারকে চিনতে পারি।
সুজাউল আরও বলেন, ঘটনার দিন পরিস্থিতি খারাপ দেখে দরবার হলের পশ্চিম পাশের একটি বাসায় আশ্রয় নিই। নায়েক শাহাদতের পরামর্শে ইউনিফর্ম খুলে লুঙ্গি ও শার্ট পরি। পরদিন শাহাদতের পরামর্শে পিলখানার পশ্চিম পাশের দেওয়াল টপকে বের হয়ে গুলশানের বাসায় যাই।
সাক্ষীর বক্তব্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মেজর সুজাউল হককে জেরা শুরু করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, বিডিআরের কোত থেকে অস্ত্র এনে আপনি বলছেন, এসব অস্ত্র বিদ্রোহের সময় পিলখানায় ব্যবহার করা হয়েছে। উত্তরে সাক্ষী বলেন, সত্য নয়। এর আগে সাক্ষী আদালতে জানান, পিলখানা থেকে জব্দ করা ১১টি অস্ত্র তার কাছে রয়েছে। সাক্ষী বলেন, প্রত্যেকটি অস্ত্রের নম্বর থাকে।
জেরা চলাকালে কিছু অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন আসায় বিচারক বলেন, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এ আদালত বসে। জনগণের অনেক টাকা খরচ হয়। অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে সময় ক্ষেপণ করা উচিত নয়।

No comments

Powered by Blogger.