বাংলাদেশ ফান্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. মশিউর রহমান রেসের মানসিকতা নিয়ে বিনিয়োগ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবেই

কেবল বাংলাদেশের শেয়ারবাজারই অস্থিতিশীল হয় তা নয়; বরং সব দেশের শেয়ারবাজারেই অস্থিতিশীলতা দেখা যায়। এখানে রেসের (ঘোড়দৌড়) মানসিকতা নিয়ে যারা বিনিয়োগ করেন, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রাস্তায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বা ভাংচুর করাকে কোনোভাবেই সুনাগরিকের বৈশিষ্ট্য বলা যায় না। গতকাল আলোচিত ৫ হাজার কোটি টাকার বাংলাদেশ ফান্ড নামের মেয়াদহীন (ওপেন এন্ড) মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট বিক্রির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।


অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন, আইসিবির চেয়ারম্যান ড. এসএম মাহফুজুর রহমান, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফায়েকুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আহমদ, ডিএসই, সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিসহ শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা। ড. মসিউর রহমান বলেন, যেখানে লাভের সম্ভাবনা বেশি, যেখানে ঝুঁকিও বেশি থাকে। যারা ঝুঁকি নিতে পারেন না বা লোকসান সহ্য করার মানসিক দৃঢ়তা নেই, তাদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আসা উচিত নয় বলে পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ মুনাফা লাভের পেছনে না ছুটে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি বা প্রকৃত বিনিয়োগ করা উচিত। বাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও আইন প্রয়োগে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মতো বাজারে ইনসাইডার ট্রেডিং বেশি হয়।
এসব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাজারের বর্তমান সংকটাপন্ন সময়ে তারল্যপ্রবাহ বাড়িয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
বাংলাদেশ ফান্ডের ইউনিট বিক্রির অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, উন্নত দেশের শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিনিয়োগ ৫০ শতাংশেরও বেশি হলেও বাংলাদেশে এখন তা ১০ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে। মিউচুয়াল ফান্ড এখানে খুব বেশি সক্রিয় নয় জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় না হলে বাজারের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব নয়। এসইসির চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ফান্ড প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় হতে সহায়তা করবে।
স্বাগত বক্তব্যে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফায়েকুজ্জামান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আইসিবির সব মিউচুয়াল ফান্ড এখন পর্যন্ত বেশ ভালো লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশ ফান্ড ভালো লভ্যাংশ প্রদান করতে পারবে। তবে ফান্ডটিকে বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য কর অবকাশ সুবিধাসহ বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে।
অনুষ্ঠান শেষে এবি ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংকের কাছে ২০ কোটি টাকা করে মোট ৪০ কোটি টাকার ফান্ড ইউনিট বিক্রির মাধ্যমে বাংলাদেশ ফান্ডের ইউনিট বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ড. মসিউর রহমান।

No comments

Powered by Blogger.