চ্যাম্পিয়নস লিগের কীর্তি-ঘটনা-অঘটন

০০ ছাড়ানো ইনিংস ছয়টি : ব্যাটসম্যানদেরই খেলা টোয়েন্টি টোয়েন্টি। গ্যালারিও ভরে যায় রান-বন্যার প্রত্যাশায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যেহেতু বিশ্বসেরা সব টোয়েন্টি টোয়েন্টি ক্লাবের খেলা তাই এখানে প্রত্যাশার পারদটাও থাকে চড়া। কিন্তু বাস্তবতা অন্য রকম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম দুই আসরে ২০০ রানের ইনিংসই হয়েছে মাত্র দুটি। ২০০৯-এ ঈগলসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২১৩ করেছিল ত্রিনিদান অ্যান্ড টোবাগো আর গতবার ওয়েম্বার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ঠিক ২০০ করে ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। দর্শক অতৃপ্তিটা অনেকটাই মিটেছে এবার।


কেননা ২০০ ছাড়ানো ইনিংসের সংখ্যাটা এবার ৬! রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তো আবার ২০০ রানের বেশি তাড়া করে ম্যাচ জিতেছে টানা দুটি। টোয়েন্টি টোয়েন্টির ইতিহাসেই এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি আর।
সর্বোচ্চ ২১৫ রানের ইনিংসটিও ডেনিয়েল ভেট্টোরির দলের। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ২১৪ রানের জবাবে ৮ উইকেটে ২১৫ করেছিল তারা। কোহলির ৩৬ বলে ৭০ আর দিলশানের ৪৭ বলে ৭৪-এর পর শেষ বলে ছক্কা মেরে বেঙ্গালুরুকে সেমিফাইনালের টিকিট এনে দিয়েছিলেন অরুণ কার্তিক। এরপর সেমিফাইনালেও নিউ সাউথ ওয়েলসের ২০৩ রান বেঙ্গালুরু ৯ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে যায় গেইলের ৪১ বলে ৯২ আর কোহলির ৪৯ বলে ৮৪-তে। গ্রুপ পর্বে সমারসেটের বিপক্ষেও বেঙ্গালুরুর ৬ উইকেটে ২০৬ রানের ইনিংস আছে একটা। সেই ম্যাচে ৫১ রানের জয়টা আবার এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। সর্বোচ্চ তিনটি ২০০ ছাড়ানো ইনিংস খেলা সেই বেঙ্গালুরুই কিন্তু ফাইনালে করতে পারেনি ১৪০ রান! এ ছাড়া নিউ সাউথ ওয়েলস গ্রুপ পর্বে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে করেছিল ২ উইকেটে ২০১।
১০০-এর নিচে দুবার : ১০০-এর কম রানের ইনিংস হয়েছে দুটি। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ৯৮ রান তাড়া করতে নেমে সেই ম্যাচে ৯ উইকেট হারিয়ে শেষ বলে ৯৯ করেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এ ছাড়া গ্রুপের অন্য ম্যাচে মুম্বাইয়ের ৭ উইকেটে ১০০ রান ১৭ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে পেরিয়ে যায় নিউ সাউথ ওয়েলস।
সেঞ্চুরি তিনটি : চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০০৯ সালে একমাত্র সেঞ্চুরিটা পেয়েছিলেন কেপ কোবরাজের অ্যান্ড্রু পুটিক। অথচ এবার সেঞ্চুরি হয়েছে তিনটি, যার দুটিই করেছেন আবার নিউ সাউথ ওয়েলসের ডেভিড ওয়ার্নার। সুপার কিংসের বিপক্ষে ৬৯ বলে অপরাজিত ১৩৫-এর পর সেমিফাইনালে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে করেন ৬৮ বলে অপরাজিত ১২৩। টোয়েন্টি টোয়েন্টির ইতিহাসে এবারই প্রথম পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন কোনো ব্যাটসম্যান। ৫ ম্যাচে ১০৯.৩৩ গড়ে সর্বোচ্চ ৩২৮ করে গোল্ডেন ব্যাটও পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া সাউথ অস্ট্রেলিয়ার ডেনিয়েল হ্যারিস বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ১০৮।
সর্বোচ্চ ছক্কা গেইলের : দু-দুটি সেঞ্চুরি করলেও ছক্কায় ক্রিস গেইল পেছনে ফেলেছেন ডেভিড ওয়ার্নারকে। ৬ ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ২৪টি ছক্কা বেঙ্গালুরুর এই ব্যাটসম্যানেরই। ১১২ মিটারের সর্বোচ্চ ছক্কার কীর্তিটাও তাঁর। ২০টি ছক্কা নিয়ে গেইলের পরই আছেন ওয়ার্নার। এ ছাড়া বিরাট কোহলির ১০, কলিন ইনগ্রাম ও ক্যালাম ফার্গুসনের ছক্কা সাতটি করে। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ১১টি ছক্কা মেরেছিলেন অবশ্য ওয়ার্নার। তা ছাড়া সবচেয়ে বেশি ২৭টি বাউন্ডারির রেকর্ডও তাঁর। কোহলির বাউন্ডারি ২৩ আর ফন ডার মারউইর ২২টি। সপ্তম সর্বোচ্চ ১৭৫ রান করলেও একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে দুবার ০ রানে আউট হয়েছেন সমারসেটের পিটার ট্রেগো।
মালিঙ্গা ম্যাজিক : মুম্বাইকে প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে জেতানো লাসিথ মালিঙ্গা ম্যাজিক দেখিয়েছেন বোলিংয়েও। ৬ ম্যাচে সর্বোচ্চ ১০ উইকেট তাঁরই। গত আইপিএলেও কিন্তু সর্বোচ্চ উইকেট ছিল এই লঙ্কানের। ব্যাট হাতে ৩৭*, ১৫ ও ফাইনালে ১৬ রানের ইনিংসের জন্য সিরিজসেরা হন তিনিই।
বাছাই পর্বের ২ ম্যাচ ধরে ৬ ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ১২ উইকেট অবশ্য ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর রবি রামপালের। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে এক ইনিংসে ৩২ রানে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সাউথ অস্ট্রেলিয়ার শন টেইট। এক ইনিংসে সবচেয়ে ভালো ইকোনমি রেট ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর সুনীল নারায়ণের। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ৪ ওভারে ২ রেটে মাত্র ৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন এই অফস্পিনার। এ ছাড়া বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেও ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছেন আবার বেঙ্গালুরুর পেসার শ্রীনাথ অরবিন্দ। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে উইকেটহীন ছিলেন তিনি। ওয়েবসাইট
সর্বোচ্চ রান
সর্বোচ্চ উইকেট

No comments

Powered by Blogger.