মুখরোচক মাছ

মাছে-ভাতে বাঙালী’ সুপ্রাচীন কালের এই প্রচলিত আপ্তবাক্যটি এখন আর বাঙালীর মুখে শোনা যায় না কারণ মাছের আকাল। তবুও চেষ্টা করে প্রতিদিন না হোক সপ্তাহে তিনদিন অন্তত মাছ যেন থাকে মেন্যুতে যা তাদের পছন্দের।
তাই এবার দেয়া হলো বাঙালীর প্রিয় কয়েক পদের মাছের রেসিপিÑ তেল কই যা লাগবে : কই মাছ ৫০০ গ্রাম, সরষের তেল ২০০ গ্রাম, হলুদ আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়ো আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়ো আধা চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, তেজপাতা ১টি, টক দই ৫০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো, কাঁচামরিচ ৬টি।
যেভাবে করবেন : মাছ পরিষ্কার করে ধুয়ে লবণ, হলুদ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রেখে কড়াইতে খানিকটা তেল গরম করে মাছগুলো হালকা ভেজে তুলুন। এবার কড়াইতে বাকি তেল গরম করে তেজপাতা ও দুটি কাঁচামরিচ চিরে ফোঁড়ন দিয়ে অল্প পানিতে আদা বাটা, ধনে, জিরা, মরিচ গুলে এতে দিয়ে কষে দিন। মসলা কষানো হলে দই ফেটিয়ে দিন। এরপর এক কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। ঝোল ফুটে উঠলে ভাজা মাছ ও কাঁচামরিচ দিয়ে দমে রাখুন। মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন।

রুই মাছের সরষে ঝাল
যা লাগবে : রুই মাছ ৫০০ গ্রাম, সরষের তেল ১৫০ গ্রাম, হলুদ গুঁড়ো আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, সরষে বাটা ২ টেবিল চামচ, কালোজিরা এক চিমটি, কাঁচামরিচ ৬টি, লবণ স্বাদমতো।
যেভাবে করবেন : রুই মাছ আন্দাজমতো টুকরো করে ধুয়ে লবণ-হলুদ মাখিয়ে রাখুন। দুটি কাঁচামরিচ চিরে নিন। সরষে বাটা দু’কাপ পানিতে গুলে রাখুন। কড়াইতে খানিকটা তেল গরম করে লবণ-হলুদ মাখা মাছের টুকরো হালকা করে ভেজে তুলুন। এবার কড়াইতে বাকি তেল দিয়ে কালোজিরা ও চিরে রাখা কাঁচামরিচ দুটি ফোঁড়ন দিন। অল্প পানিতে হলুদ ও মরিচগুঁড়ো গুলে তেলের মধ্যে দিন। একটু কষিয়ে এতে সরষে গোলা পানি ছাঁকনিতে ছেঁকে দিন। পরিমাণমতো লবণ ও বাকি কাঁচামরিচ দিন। ঝোল ফুটে উঠলে ভাজা মাছ দিয়ে চুলার জ্বাল কমিয়ে দিয়ে ওপরে কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে দিন। ঝোল অল্প থাকতে নামিয়ে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিন।

দই ইলিশ
যা যা লাগবে : ইলিশ ৫০০ গ্রাম, টকদই ২০০ গ্রাম, সরষের তেল ১৫০ গ্রাম, আদা বাটা ১ চা চামচ, হলুদ আধা চা চামচ, সরষে আধা চা চামচ, কাঁচামরিচ ৮টি, লবণ স্বাদ অনুযায়ী।
যেভাবে করবেন : ইলিশ মাছ কেটে ধুয়ে লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রাখুন। চারটি কাঁচামরিচ চিরে রাখুন। সরষে একটি কাঁচামরিচ দিয়ে বেটে রাখুন। এবার কড়াইতে তেল গরম করে চেরা কাঁচামরিচ ফোঁড়ন দিয়ে আদা বাটা দিন। আদা সামান্য ভেজে এক কাপ পানি ও পরিমাণমতো লবণ দিন। পানি ফুটতে শুরু করলে মাছ দিন। মাছ সিদ্ধ হয়ে পানি যখন শুকিয়ে আসবে তখন টকদই ফেটিয়ে সরষে বাটা ও সামান্য হলুদ মিশিয়ে ইলিশ মাছের ওপর ঢেলে দিয়ে আঁচ কমিয়ে দিন। কয়েকটি কাঁচামরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে নিন।

চিংড়ির কালিয়া
যা যা লাগবে : বড় চিংড়ি মাছ ৫০০ গ্রাম, আলু ২টি (বড়, লম্বা টুকরো করা) মটরশুঁটি আধা কাপ, পিঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, হলুদ আধা চা চামচ, মরিচগুঁড়ো ১ চা চামচ, গরম মসলা পরিমাণমতো, তেজপাতা ১টি, লবণ মিষ্টি স্বাদমতো, টমেটো ১টি (মাঝারি), তেল ১৫০ গ্রাম, রসুন বাটা ৩ কোয়া।
যেভাবে করবেন : চিংড়ি মাছ বেছে ধুয়ে লবণ-হলুদ মাখিয়ে খানিকটা তেল গরম করে মাছ ভেজে তুলে রাখুন। আলু ভেজে তুলে রাখুন। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে তেজপাতা ফোঁড়ন দিয়ে আদা-রসুন বাটা হালকা ভেজে হলুদ-মরিচগুঁড়ো একটু পানিতে গুলে দিন। মসলা ভাজা ভাজা হলে ওর মধ্যে টমেটো চার ফালি করে দিয়ে কষুন। কষানো হলে পরিমাণ মতো পানি, লবণ, মিষ্টি, আলু, চিংড়ি মাছ ও মটরশুঁটি দিয়ে ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। ঝোল মাখা মাখা হলে গরম মসলা বাটা দিয়ে নামিয়ে নিন।

শোল তেল ঝাল
যা যা লাগবে : শোল মাছ ১ কেজি, ফুলকপি (ছোট) ১টি, আলু ২টি, ধনে ১ চা চামচ, শুকনো মরিচ ১ চা চামচ, হলুদ আধা চা চামচ, রাঁধুনী আধা চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, সরষের তেল বা সয়াবিন তেল ২০০ গ্রাম, আদা সামান্য থেঁতো করা, ধনে পাতা ১ আঁটি।
যেভাবে করবেন : মাছ ধুয়ে কেটে মাথাটা আলাদা করে রাখুন। কড়াইয়ে খানিকটা তেল গরম করে মাছে লবণ-হলুদ মাখিয়ে সামান্য ভেজে তুলে রাখুন। এবার বাকি তেল দিয়ে রাঁধুনী ও থেঁতো করা আদা ফোঁড়ন দিয়ে সব মসলা দিন। নেড়েচেড়ে মাথা দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে আলু কপি দিন। (আলু ছয় টুকরো ও কপির ফুল আন্দাজমতো রাখবেন)। আলু-কপি কষিয়ে এক কাপ পানি দিন। পানি ফুটে উঠলে মাছ ছেড়ে ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। আলু-কপি সিদ্ধ হলে ঝোল থাকা অবস্থায় ধনেপাতা কুচি ছেড়ে নামিয়ে নিন।
মেরিনা চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.