আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

 দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম আর বহু তাজা প্রাণ বিসর্জনের মাধ্যমে পাকিসত্মানের সংবিধান বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ঠিকই। কিন্তু এর পরপরই এ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন আহমেদ বাংলায় দরখাসত্ম লিখে তা হাইকোর্টে দাখিল করতে চাইলে কোর্ট তা গ্রহণ করেনি।
এতে ৰিপ্ত হয়ে বাংলায়ই এক রিট পিটিশন করেন তিনি। সে মামলা খারিজ হওয়ার পর তিনি মামলার বিরম্নদ্ধে পাকিসত্মান সুপ্রীমকোর্টে আপীলের অনুমতির জন্য দরখাসত্ম করলেও তা বাতিল হয়ে যায়। পরে পাকিসত্মানের সংবিধানে ১৯৫৬-এর ২১৪ অনুচ্ছেদে উদর্ু ও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলেও পরবতর্ী ২০ বছর অফিসে ইংরেজীর ব্যবহার চালু থাকবে। তারপরই পার্লামেন্ট আইন পাস করতে পারবে কি কি উদ্দেশ্যে ইংরেজী ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু ১৯৫৮ সালে আবার সংবিধান বাতিলের ফলে পূর্ব পাকিসত্মানে বাংলা প্রচলনের আর কোন উদ্যোগ রইল না।
এর পর ৬২ সালে পাকিসত্মান সংবিধানে উদর্ু ও বাংলাকে জাতীয় ভাষা হিসেবে বর্ণিত হলেও ইংরেজি প্রচলনের জন্য দশ বছর সময় নেয়া হয়। '৭২ সালে প্রেসিডেন্ট একটি কমিশন গঠন করবেন বলেও জানানো হয়। কিন্তু '৭১ সালের ১৫ ফেব্রম্নয়ারি বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে একুশের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, আমি ঘোষণা করছি, যেদিন আমাদের হাতে ৰমতা আসবে, সেদিন থেকেই দেশের সর্বসত্মরে বাংলা ভাষা চালু হবে।
অবশেষে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ মন্ত্রিসভা গঠন করে ঘোষণা করেন, বাংলা হবে দেশের সরকারী ভাষা। তবে আইন প্রণয়নের ৰেত্রে বাংলার প্রচলন সম্ভব হয়নি।
বাঙালীর রাষ্ট্রভাষা হিসেবে এই মাসের শুরম্ন থেকেই বিভিন্ন স্থানে চলছে নানা আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা অব্যাহত রয়েছে এখনও, আর চলবে পুরো ফেব্রম্নয়ারি মাস জুড়েই। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমীর একুশে বইমেলার মূল মঞ্চে আরোচনা হবে ভাষা সংগ্রামী গাজীউল হককে নিয়ে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। প্রবন্ধ পাঠ করবেন আমিনুর রহমান সুলতান। আলোচনায় আরও অংশ নেবেন অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, মেসবাহউদ্দীন আহমেদ, বেবী মওদুদ ও জেয়াদ-আল-মালুম।

No comments

Powered by Blogger.