পিলখানা হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে মিল রয়েছে রাবি হত্যাকাণ্ডের॥ জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী

 অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেছেন, বিডিআর হত্যাকা-ের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতার মিল রয়েছে। পিলখানায় যেভাবে মৃত ব্যক্তির লাশ ম্যানহোলে ফেলা হয়েছে একই ভাবে রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয়ের শিৰাথর্ী ফারম্নক হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার পর ম্যানহোলে ফেলে রাখ হয়। এমন বর্বর ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবির সকল ধর্মে লাশকে সম্মান করা হয়।
মৃত ব্যক্তির ওপর কোন প্রকার নির্যাতন নিপীড়ন করা হয় না। এক মাত্র জামায়াত ইসলাম ও তাদের ছাত্র সংগঠন শিবির মৃত্যুর পর লাশকে টুকরা টুকরা করে। ছুঁড়ে ফেলে ম্যানহোলে, নালা নর্দমায়। একাত্তর সালেও তারা এমন করেছে, এখনো একই কাজ করে যাচ্ছে। স্বধীনতার পরপরই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হলে এমনটা হতো না বলে তিনি উলেস্নখ করেন। বুধবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের প্রামাণ্যচিত্র জিহাদের প্রতিকৃতির বিরম্নদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান মোঃ মুজাহিদের উকিল নোটিশ ও মামলার হুমকি সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, জিহাদের প্রতিকৃতির নির্মাতা শাহরিয়ার কবির, এ্যডভোকেট জিয়াদ আল মামুন ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
দ্রম্নত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি করে কবীর চৌধুরী বলেন, যুদ্ধাপরাধীরা ধার্মিক নয়, তারা ধমর্ান্ধ। ধর্মকে রাজনীতির জন্য ব্যবহার করে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোন ধর্মের বিষয় নয় তাদের বিরম্নদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল কতর্ৃক প্রেরিত উকিল নোটিশ প্রসংঙ্গে শাহরিয়ার কবির বলেন ৭১- এর যুদ্ধাপরাধ কিংবা পরবতর্ীকালের জঙ্গী সম্পৃক্ততা অভিযোগ যদি মিথ্যা হয় জামায়াতের উচিৎ তদনত্ম ও বিচারের উদ্যোগকে স্বাগত জানানো, অভিযোগকারীকে হুমকি দেয়া নয়।
তিনি বলেন, আমি কখনও তথ্য প্রমাণ ছাড়া কথা বলি না। জিহাদের প্রতিকৃতি ছবিতে আমার খুব সামান্য বক্তব্য আছে। এতে শুধু জঙ্গী নেতা ও জঙ্গী ভিকটিম, জঙ্গী মৌলবাদ সম্পর্কে গবেষক, ঐতিহাসিক, ইসলামী চিনত্মাবিদ ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রয়েছে। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে জামায়াতের জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা। জিহাদের প্রতিকৃতি প্রামাণ্য চিত্র তাদের বক্তব্যের শিল্প সম্মত গ্রন্থনা হিসেবে উলেস্নখ করেন নির্মাতা। তিনি বলেন তার প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের এবং বাঙ্গালী জাতির প্রতিধ্বনি উচ্চারিত হয়েছে।
মুজাহিদের আইনজীবী নোটিশে দাবী করেছেন মুজাহিদ এক জন আইনমান্যকারী নাগরিক। এ প্রসংগে শাহরিয়ার কবির বলেন, যে দল দেশের সংবিধান মানে না সেই দলের নেতা কখনো আইনমান্যকারী হতে পারেন না। একই নোটিশে মুজাহিদকে একজন সম্মানিত নাগরিকও দাবী করেন মুজাহিদের আইনজীবী। এই বিষয়ে শাহরিয়ার কবির বলেন, পাকিসত্মানি হানাদার বাহিনীর নিকৃষ্ট দালাল কখনো সম্মানিত মানুষ হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজাহিদের হত্যা, নির্যাতন, এবং রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকান্ডের বহু বিবরণ দেশের মানুষের জানা। এমন ব্যাক্তি কিভাবে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক হতে পারেন বিষয়টি বোধগম্যনয়। শুধু তা নয় তাদের দল ইসলামী মূল্যবোধের কথা বলে কিভাবে ইসলামকে ধ্বংস করছে তাও এখন আলেম ওলামাদের মূল্যায়নে বের হয়ে আসছে বলে জানান শাহরিয়ার কবির।
বিচারপতি গোলাম রাব্বানী বক্তাদের সঙ্গে একমত পোষন করেন এবং দ্রম্নত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবী করেন।
ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর মুজাহিদের উকিল নোটিশ প্রসংঙ্গে বলেন, প্রামাণ্যচিত্রে যারা মুজাহিদের বিরম্নদ্ধে কথা বলেছে তাদের বিরম্নদ্ধে ৰিপ্ত না হয়ে মুজাহিদ উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে শারিয়ার কবিরের বিরম্নদ্ধে। প্রেরিত নোটিশ অস্পষ্ট বলে উলেস্নখ করে তিনি।

No comments

Powered by Blogger.