ফখরুলের পক্ষে আবেদন- নতুন মামলায় গ্রেপ্তার না করার নির্দেশনা চেয়ে রিট

যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ব্যতিরেকে নতুন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার না করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল রোববার সকালে মির্জা ফখরুলের পক্ষে আবেদনটি দাখিল করা হয়। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক ও জয়নুল আবেদীন আবেদনটি উপস্থাপন করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় এ রিটের ওপর শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।
রিটের পক্ষের আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া একের পর এক মামলায় ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। এটা উদ্দেশ্যমূলক। তাই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া তাঁকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি না করা এবং বিদ্যমান মামলাগুলোতে জামিন পাওয়ার পর তাঁকে যেন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো না হয়, রিটে সেই নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনের বিষয়বস্তু থেকে জানা যায়, জামিন পাওয়ার পর একের পর এক মামলায় মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। আবেদনে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীর (এফআইআর) আসামি কলামে নাম নেই—এমন মামলায় মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। অন্য মামলায় জামিনের পর যথাযথ আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও আইনের যথাযথ বিধান ছাড়া তাঁকে গ্রেপ্তার না করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ, বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ ১৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের রাজপথ অবরোধ কর্মসূচির দিন গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৩৭টি মামলা হয়। এসব মামলার মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ছয়টিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
এর মধ্যে পল্টন থানা ও শেরেবাংলা নগর থানার দুটি মামলায় গত ১০ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুলকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে। ওই দুটি মামলায় ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান। এর পরদিনই তাঁকে মতিঝিল ও সূত্রাপুর থানার দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এরপর ১৫ ডিসেম্বর সূত্রাপুর থানার মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত ফখরুলের জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিনই পল্টন থানা ও কলাবাগান থানার অপর দুটি মামলায় ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। যথাক্রমে ২৪ ও ২৯ জানুয়ারি রিমান্ডের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

No comments

Powered by Blogger.