হিমাগার ছাড়াই আলু সংরক্ষণ

হিমাগার ছাড়াই আলু সংরৰণের নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। যার নাম আলুঘর। এ পদ্ধতিতে কৃষকগণ কোন বাড়তি খরচ ছাড়াই ৩ থেকে ৪ বছর আলু সংরৰণ করে রাখতে পারবে।
আলু রাখার পর থেকে প্রতি ২০-২৫ দিন অনত্মর আলুর গাদা পরীৰা করে দেখতে হবে। গাদায় পচা, ভেজা বা পোকা ধরা আলু দেখামাত্র সরিয়ে ফেলতে হবে। এৰেত্রে আলুঘরটি পুকুর পারে নিমগাছের নিচে হরে সবচেয়ে ভাল হয়। প্রথমে মাটি থেকে সামান্য উপরে একটি মাচা বানাতে হবে। পরে এক মাচা থেকে অন্য মাচার মধ্যবতর্ী দূরত্ব আড়াই থেকে তিন ফুট হলে সংরৰণ পরবর্তী বাছাই ও অন্যান্য কাজ সহজ হবে। আলুঘর বাঁশ ও ছনের তৈরি হওয়াই শ্রেয়। সর্বোচ্চ মাচা চালা থেকে প্রায় সাড়ে তিন ফুট নিচে থাকলে ভাল হয়। মাচা তৈরির পর প্রতি মাচাতে ১০-১২ ইঞ্চি পুরম্ন করে আলু রাখতে পারবে। পরীৰা করে দেখা গেছে, এভাবে ১০১২ ফুট একটি আলুঘরে প্রতি মাচায় ২ হাজার কেজি আলু রাখা সম্ভব। ৩-৪ বছর পর ঘরের মাচা ও চাল মেরামত করলে আরও প্রায় ২ বছর তা ব্যবহার করা যায়। আর যদি ঘর তৈরির সময় সিমেন্টের তৈরি খুঁটি দেয়া যায়, তবে ঘরের স্থায়িত্ব অনেক বেশি হয়। আলু সংরৰণের পূর্বে বাছাই করে কাটা, পচা, দাগি বা পোকা আক্রানত্ম আলু সরিয়ে ফেলতে হবে। সংরৰিত আলু যেহেতু সরাসরি খাবার আলু হিসেবে ব্যবহার করা হবে তাই কীটনাশক না ব্যবহার করে নিম বা বিষকাটালী বা ল্যান্টনের শুকনা পাতা উপরে বিছিয়ে দেয়া যেতে পারে। আলুঘর চওড়া ও বড় হলে ভাল হয়। ঘরে যাতে রৌদ্র ঢুকতে না পারে সেজন্য ঝাপ তৈরি করে নেয়া ভাল। তাছাড়া ঘরের বড় বড় হাঁড়িতে করে পানি জানালা বরাবর রাখলে উচ্চ আদর্্রতা বজায় থাকে। আলুঘরের আশপাশে বড় গাছ না থাকলে লাউ, কুমড়া, শিম জাতীয় গাছ লাগিয়ে উপরে তুলে দিলে ভাল হয়। আলুর সত্মূপ মশারি দিয়ে ঢেকে রাখা উচিত।
ছোট জায়গায় অধিক পরিমাণ আলু সত্মূপ করে রাখলে তাতে অক্সিজেনের অভাবে আলুতে কালো কেন্দ্ররোগ দেখা যায়। আলুতে সূর্যের আলো পড়লে আলু সবুজাভ হয় এবং চামড়ায় বিষাক্ত পদার্থের সৃষ্টি করে। এজন্য স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরৰণের জন্য ঘরটি অবশ্যই অপেৰাকৃত ঠা-া, সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে এবং গাছের ছায়ায় হলে সবচেয়ে ভাল।
তাছাড়া ঘরটি পুকুর পারে হলে আরও ভাল। কৃষিবিদ ফসিউল আলম বলেন, এভাবে ৫-৭ মাস তেমন কোন ৰতি ছাড়াই চাষিগণ আলু সংরৰণ করতে পারবেন।
_বশিরুল ইসলাম

No comments

Powered by Blogger.