আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই ॥ by এরশাদ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে কোন মনত্মব্য করতে চাই না। মৃত ব্যক্তির লাশ নিয়ে টানাহেঁচড়া ঠিক নয়। একজন মৃত ব্যক্তির লাশ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হোক তা চাই না।
প্রধানমন্ত্রী চাইলে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ হবে। বুধবার দলের বনানী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের উপর আওয়ামী লীগের হামলার ব্যাপারে এরশাদ বলেন, হামলার ঘটনা স্বাভাবিক। তারাও কিছু চায়, আমরাও চাই। এই প্রেৰাপটে হামলা হওয়া স্বাভাবিক। যদি এমন ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে সমাধান হবে। জাতীয় পার্টি কেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরাও বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ না হওয়া প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, পুরনো সবকিছু ভুলে যান। রাষ্ট্রপতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে 'দৈনিক জনকণ্ঠে' দেয়া সাৰাতকারে বিসত্মারিত বলেছি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সরকারে গেলে কি পাব? অনেক পেয়েছি। রাষ্ট্রপতি ছিলাম। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। অপূর্ণতা নেই। রাষ্ট্রপতি হিসেবে মানুষ এখনও আমাকে সম্মান করে। হারানো সম্মান আবার ফিরে পেয়েছি। জেল থেকে ফিরে কোন নেতা রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার নজির পৃথিবীতে নেই। এটা আমার বড় অর্জন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দুই নেত্রীর মধ্যে একজনকে অমানুষ বলেছেন, এ ব্যাপারে এরশাদ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, যিনি বলেছেন তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাস করম্নন। বিষয়টি আমার জানা নেই। বিএনপির পৰ থেকে বলা হয়েছে জিয়ার লাশ আপনি নামিয়েছিলেন। সংসদে দাঁড়িয়ে মহাজোট নেত্রীকে এ কথা জানান। এমন প্রশ্নে জবাবে এরশাদ বলেন, আমার নিজের দল আছে। অন্য কেউ আমাকে দায়িত্ব দিলে পালন করব তা ঠিক নয়। লাশ নিয়ে সংসদে কথা বলা প্রয়োজন মনে করি না। এ ব্যাপারে সংসদে অনেক কথা হয়েছে।
ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন শিৰা প্রতিষ্ঠানে সহিংসতার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এই কালচার অনেক আগের। সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন পদৰেপ নিয়েছেন। আশা করি গৃহীত পদৰেপে ক্যাম্পাস সহ সারাদেশে শানত্মি ফিরে আসবে। দ্রম্নত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ হবে। এ ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন, দ্রম্নত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তিনি বলেন, ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিপর্যয় অবস্থা থেকে দেশের উত্তরণ ঘটেছে। এক বছরে সরকারের সফলতা অনেক। তারা অনেক ভাল কাজ করছে। এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। আশা করি সন্ত্রাসসহ সব ধরনের সমস্যার সমাধান হবে।
মহাসচিব এবিএম রম্নহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের ২২ জেলায় সম্মেলন শেষ করা হবে। ইতোমধ্যে ৫০ জেলার সম্মেলন শেষ হয়েছে। আমরা তৃণমূলের অনেক পথ অতিক্রম করেছি। প্রত্যাশা, দেশের প্রতিটি ঘরে জাতীয় পার্টির একজন নেতা-কর্মী তৈরি করা। দল এখন আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। নেতৃত্বের অসহায়ত্বের কারণে জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠনগুলো প্রাণ ফিরে পাচ্ছে না। দেশের গুরম্নত্বপূর্ণ সন্ধিৰণে এখন জাতীয় পার্টি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী দলের গঠনতন্ত্রের তিনটি ধারায় সংশোধনী আনতে যৌথসভার আহ্বান করা হয়। সভায় সংশোধনীর পৰে মত দেন সবাই। আগামী কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে সংশোধনী পাস করানো হবে। যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিএম কাদের, কাজী ফিরোজ রশিদ, সালমা ইসলাম প্রমুখ। সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে ৪১ জন উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.