মানবতাবাদী এক ডাক্তারের গল্প

জীবনের দীর্ঘ সময় একটি 'র্যালি' বাইসাইকেলের মাধ্যমে ঘুরে ঘুরে রোগীর চিকিৎসা করে বেড়িয়েছেন ভালুকা, ত্রিশাল, শ্রীপুর ও ফুলবাড়িয়া এলাকার প্রত্যনত্ম অঞ্চল। তাঁকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা এক নামে চেনেন।
তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. রমজান আলী তরফদার। হাটে, মাঠে, চলার পথে যেখানে রোগী সেখানেই তাঁর চিকিৎসা। চিকিৎসার ধরনেও আছে ভিন্নতা। তিনি রোগীর মনের সাথে নিমিষেই মিশে যান। অজ পাড়াগাঁয়ের সাধারণ মানুষ তাঁর কাছে মন খুলে বলতে পারেন তাঁদের সমস্যার কথা। অপ্রয়োজনে কমিশন পাওয়ার জন্য কাউকে কোন ডাক্তারি পরীা দেন না তিনি। বিশেষ করে মহিলা রোগীরা তাঁর চিকিৎসা নিতে খুবই পছন্দ করে। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তিনি মানবসেবা করে চলেছেন। জীবনের শেষ প্রানত্মে এসে অসুস্থ শরীরেও প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন দরিদ্র রোগীকে সেবা দিয়ে চলেছেন। রোগী দেখতে গিয়ে কখনও বিরক্ত হয়েছেন_ এ কথা কেউ বলতে পারবে না। কে ভিজিট দিল বা না দিল সে দিকটার প্রতিও নেই তাঁর খেয়াল। দরিদ্র, নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষের পরম বন্ধু ডাক্তার রমজান আলী তরফদার ১৯২৯ সালে ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম আবদুল জব্বার তরফদার। ছাত্রাবস্থাতেই এলাকার দরিদ্র মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। ডাক্তারি পেশায় দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সেবক হিসাবে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ৭১ সালে জীবনকে বাজি রেখে মেজর আফসারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যনত্ম মুক্তিযুদ্ধউত্তর বাংলাদেশ রেডক্রস ও ইউনিসেফের অর্থায়নে ভালুকায় প্রতিষ্ঠিত আফছার উদ্দিন ব্যাটালিয়ন স্মৃতি হাসপাতালের পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
ডা. রমজান আলী জানান, "জীবনে কারও কাছ থেকে চেয়ে ভিজিট নেইনি। কী পেলাম তা বড় কথা নয়। মানুষকে কতটা সেবা দিতে পারলাম সেটাই হলো আসল।"
_কামরম্নল এহসান চন্দন, ভালুকা

No comments

Powered by Blogger.