পেঁয়াজ-পর্যাপ্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থা চাই

উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় প্রতিবছর উৎপাদিত পেঁয়াজের ১০ শতাংশ উপযুক্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে পচে নষ্ট হয় বলে গতকাল শুক্রবার সমকালের লোকালয় পাতায় রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে।
'উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ১০০ কোটি টাকার পেঁয়াজ নষ্ট' শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টটি অনুযায়ী প্রতিবছর পচে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের পরিমাণ সাড়ে তিন লাখ টনেরও বেশি। অথচ পেঁয়াজ আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর তালিকায় একটি বিশেষ স্থান জুড়ে রয়েছে। প্রতিবছরই কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে পেঁয়াজের চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি পূরণ নিশ্চিত করতে হয়। আর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে বা রফতানিকারক দেশে নানা প্রাকৃতিক কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হলে চড়া দামে আমাদের পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এর প্রভাব অভ্যন্তরীণ বাজারে অনুভূত হয়। ভোক্তাদের এজন্য দৈনন্দিন বাজারের বাজেটে ব্যয়ের পরিমাণ বাড়াতে হয়। সরকার উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তুলে পেঁয়াজের ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভরতা অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। এভাবে প্রতিবছরই পেঁয়াজ আমদানি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হ্রাস করা সম্ভব। অন্যদিকে আমাদের পেঁয়াজের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে এর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার নতুন এলাকায় কৃষকদের এ কৃষিপণ্যটি উৎপাদনে উৎসাহিত করতে পারে। এতে পেঁয়াজ উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারি। উৎপাদনের মাধ্যমে বাজারে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা গেলে প্রায় প্রতিবছর পেঁয়াজ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী তাদের লাভের অঙ্ক বাড়িয়ে নিতে গিয়ে এর বাজারকে অস্থিতিশীল করার মওকা পাবেন না।
দেশে আলুসহ অন্য কাঁচা সবজি ও পণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও পচনশীল নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য পেঁয়াজ সংরক্ষণের কোনো আধুনিক ব্যবস্থা নেই। এখনও কৃষকরা সেই সনাতনী পদ্ধতির মাচা, চাঙা বা উঁচু জায়গায় জাংলা করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকেন। কিন্তু এ পদ্ধতিতে বেশিদিন পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায় না বলে মৌসুমের শুরুতেই অনেক পেঁয়াজ পচে যায়। সরকার তথা আমাদের কৃষি দফতরকে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। এর ফলে উৎপাদক কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই উপকৃত হবে।

No comments

Powered by Blogger.