ব্রাহিমির সতর্কতা-সংকট না কাটলে সিরিয়া হবে আরেক 'সোমালিয়া'-শান্তি পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনের আশা

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের অবসান না হলে দেশটি যুগোস্লাভিয়ার মতো হয়তো ভেঙে যাবে না, তবে আরেকটি 'সোমালিয়া' হবে। এর অর্থ 'যুদ্ধবাজদের কবলে জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে।'
সিরিয়াবিষয়ক জাতিসংঘ ও আরব লিগের বিশেষ দূত লাখদার ব্রাহিমি দেশটির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিজের ঘোষিত সিরিয়ার শান্তি পরিকল্পনায় বিশ্বশক্তির সমর্থন পাবেন বলেও আশা করেন তিনি।
গত রবিবার মিসরের রাজধানী কায়রোয় আরব লিগের প্রধান নাবিল আল-আরাবির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রাহিমি বলেন, 'সিরিয়ার পরিস্থিতি খুব, খুব খারাপ। ক্রমে তা আরো খারাপ হচ্ছে। গত প্রায় দুই বছরে যদি মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজারের মতো হয়, তবে অবস্থার উন্নতি না হলে আগামী এক বছরে আরো এক লাখ মানুষের প্রাণ যাবে।' তিনি জানান, গত জুনে জেনেভা ঘোষণার আলোকে অস্ত্র বিরতি কার্যকর করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রশ্নে একটি শান্তি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। ব্রাহিমি বলেন, 'এ ব্যাপারে আমি সিরিয়া ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেছি।' আগের দিন শনিবার মস্কো সফরকালে তিনি বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সামনে দুটো পথ খোলা, 'রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংকট সমাধান, নয়তো নরকে গমন।'
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেছেন, 'স্বৈরশাসক' আসাদকে হাতের নাগালে পাওয়া সময়ের ব্যাপার। গতকাল দেশটির সীমান্ত এলাকায় আশ্রয়শিবির পরিদর্শন শেষে সিরীয় শরণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আপনাদের। কিন্তু আপনারা হতাশ হবেন না। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, আল্লাহর রহমতে খুব শিগগির সংকট কেটে যাবে।' এ সময় তাঁর সঙ্গে সিরিয়ার সরকারবিরোধীদের জোট ন্যাশনাল কোয়ালিশনের প্রধান আহমেদ মোয়াজ আল খতিব উপস্থিত ছিলেন। তুরস্কে প্রায় দেড় লাখ সিরীয় নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে সিরিয়ার তারতুস বন্দরে রাশিয়ার নৌঘাঁটির উদ্দেশে তৃতীয় যুদ্ধজাহাজ যাত্রা শুরু করেছে। রুশ সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ১০ দিনের মধ্যে এটি হয়তো বন্দরে ভিড়বে। ধারণা করা হচ্ছে, রুশ নাগরিকদের দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে এটিকে প্রস্তুত রাখা হবে। স্নায়ুযুদ্ধকালীন এই দুই মিত্র রাষ্ট্রের অনেক নর-নারীর বিয়ে হয়েছে। বিশেষ করে অনেক রুশ নারী বিয়ে করে সিরিয়ায় থিতু হয়েছেন। সূত্র : এএফপি, গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.