পূর্ব তিমুরে জাতিসংঘ মিশনের সমাপ্তি

জাতিসংঘের সর্বশেষ সেনা দলটি গতকাল সোমবার পূর্ব তিমুর ত্যাগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে সংস্থাটির শান্তি রক্ষা মিশনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হলো। ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট আয়োজনসহ ১৩ বছর ধরে নতুন দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করে জাতিসংঘ।
পূর্ব তিমুর ইন্দোনেশিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে পূর্ব তিমুরের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জাতিসংঘ। তিমুরবাসীর স্বাধীনতার লড়াই কঠোর হাতে দমনের চেষ্টা করা হলে দেশটিতে দেখা দেয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। বহু রক্তপাতের পর স্বাধীনতার প্রশ্নে ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০২ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় পূর্ব তিমুর। মাঝখানে দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও ২০০৬ সালে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে জাতিসংঘ মিশন আবার ফিরে আসে।
পূর্ব তিমুরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর গত অক্টোবর থেকে শান্তিরক্ষা বাহিনী প্রত্যাহার শুরু হয়। গতকাল ভোরে তাদের সর্বশেষ সেনা দলটি পূর্ব তিমুর ত্যাগ করে।
উপপ্রধানমন্ত্রী ফার্নান্দো লা সামা দ্য আরাউজো বলেন, 'পূর্ব তিমুরের জন্য জাতিসংঘ যা করেছে তার জন্য তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছি। ১০ বছরের মধ্যে জাতিসংঘসহ যেসব বন্ধুদের আমরা আমাদের সঙ্গে পেয়েছি, তাদের সহযোগিতায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব বলে আমরা আশা করছি।'
দেশটিতে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান ফিন রেস্কে এক বিবৃতিতে বলেন, 'তিমুরের জনগণ ও দেশটির নেতারা সমস্যা মোকাবিলায় অদম্য সাহস ও অবিচল সংকল্প দেখিয়েছে। যদিও এখনো অনেক কাজ বাকি, তবু যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, এটা এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।'
২০০২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরুর দিন থেকেই দেশটি সরাসরি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ছিল। সংস্থার প্রায় দেড় হাজার সেনা অবস্থান করছিল দেশটিতে। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্সের (আইএসএফ) সেনাও দেশটিতে মোতায়েন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার সেনারা গত মাসে পূর্ব তিমুর ছাড়ে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.