প্রতি উপজেলায় একটি করে প্রাইমারী স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী চালু আজ

 আজ থেকে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় একটি করে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা চালুর অংশ হিসাবে প্রথম পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত নিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার সন্ধ্যায় এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করে আরও নতুন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সচিব এম নিয়াজউদ্দিন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ। বৈঠক শেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন রাতে জনকণ্ঠকে বলেন, শিক্ষানীতিতে আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের কথা বলা আছে। আমরা মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য বাছাই করে যোগ্যতাসম্পন্ন ৪৮৭টি উপজেলায় একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ষষ্ঠ শ্রেণী চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মঙ্গলবার (আজ) থেকে শুরু হতে যাওয়া শিক্ষাবর্ষ থেকেই এসব স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা কার্যকর হবে বলে জানান মন্ত্রী। জানা গেছে, এর আগে জাতীয় শিক্ষানীতিতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়ন নিয়ে জটিলতায় পড়েছিল শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। চরম অর্থ সঙ্কট, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকা এবং শিক্ষকদের মর্যাদা অক্ষুণœ রাখাই নীতি বাস্তবায়নে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। ফলে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে গঠিত সংশ্লিষ্ট সাবকমিটি এমনকি দুই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠক করেও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। ২০১০ সালের ৩১ মে শিক্ষানীতি মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন পায়। এরপর ২৭ জুন জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে গঠন করা হয় ৩২ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতীয় কমিটি। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে সদস্য করে এ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন নির্ধারণ, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান এবং কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করার দায়িত্ব দেয়া হয় সরকার গঠিত এই কমিটিকে। উল্লেখ্য, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার সকল স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদান নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে নতুন এই শিক্ষানীতি, যা কার্যকর হলে প্রথম থেকে উচ্চ শিক্ষাস্তর পর্যন্ত পুরোপুরি পাল্টে যাবে দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা। বহু ধারায় প্রাথমিক শিক্ষা বিভক্ত থাকলেও সকল ধারার জন্য বাধ্যতামূলক হবে রাষ্ট্র নির্ধারিত অভিন্ন শিক্ষাক্রম। প্রাথমিক স্তরে ৬টি বিষয় থাকবে যা প্রাথমিক শিক্ষার সকল ধারার শিক্ষার্থীর জন্য হবে বাধ্যতামূলক। প্রাথমিক শিক্ষাস্তর হবে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। মাধ্যমিক শিক্ষা হবে নবম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আগের মতো কেবল শিক্ষানীতি প্রণয়ন হবে কিন্তু বাস্তবায়ন হবে না আমরা এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসব।

No comments

Powered by Blogger.