আলোর রোশনাইয়ে বর্ষবরণ

চোখজুড়ানো আতশবাজি ও উৎসবমুখর নানা আয়োজনের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে বিশ্ববাসী। ঘড়ির কাঁটা সোমবার রাত ১২টার ঘর ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বের প্রায় বড় শহর আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
২০১৩ সালকে স্বাগত জানাতে সিডনি থেকে দুবাই, মস্কো থেকে লন্ডন সব স্থানেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেও প্রস্তুতি রাখা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হারবার ব্রিজের কাছে ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে আতশবাজি প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। আকাশে আলোর রকমারি ঝলকানি তৈরি করতে প্রায় সাত টন আতশবাজি পোড়ানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়। হারবাজ ব্রিজে গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজন করা হয়। সিডনির মেয়র ক্লোভার মুর বলেন, 'বিশ্বজুড়ে সিডনির নববর্ষবরণ অনুষ্ঠানের খ্যাতি রয়েছে। প্রায় ১০০ কোটি লোক এ অনুষ্ঠান দেখে। এটা এ কারণে নয় যে ২০১৩ সালকে বরণ করার সবচেয়ে বড় আয়োজন হচ্ছে এখানে। বরং এটিই শ্রেষ্ঠ আয়োজন।'
লন্ডনের টেমস নদীর তীরে, মস্কোর রেড স্কয়ার ও ক্রেমলিন, হংকংয়ের ভিক্টোরিয়া হারবার, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর, তাইওয়ানের তাইপেই, সুইডেনের স্টকহোম, নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম এবং চীনের বড় শহরগুলোতেও নববর্ষের বড় ধরনের আয়োজন করা হয়। দুবাইয়ে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন বুর্জ খলিফায় নববর্ষের অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান হয় রাতভর। নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ঐতিহ্য অনুসরণ করে বল ছুড়ে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা সংগীত শিল্পীদের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া পপ গায়ক সাইও সেখানে যোগ দেন। তবে অর্থনৈতিক সংকট এবার যুক্তরাষ্ট্রের নববর্ষের আয়োজনকে অনেকাংশেই ম্লান করে দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজের শারীরিক পরিস্থিতি অবনতির কারণে ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে বলিভার স্কয়ারের নববর্ষের অনুষ্ঠান স্থগিত করে নগর কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ শাভেজের সুস্থতা কামনায় জনগণকে প্রার্থনা করার আহবান জানিয়েছেন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে থার্টিফার্স্ট নাইটে সব ধরনের আতশবাজি নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ফ্রান্সের সব দোকান ও অফিসে বাতি নিভিয়ে রাখারও প্রস্তাব দেয় সরকার।
এদিকে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের শোয়েদাগন প্যাগোডার সামনে নববর্ষবরণের বড় ধরনের আয়োজন হয়। প্রায় ৫০ হাজার লোক এতে যোগ দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। জান্তা শাসনের অবসানের পর প্রথমবারের মতো আতশবাজির মাধ্যমে বর্ষবরণের সুযোগ পায় মিয়ানমারের জনগণ।
তবে নববর্ষের আয়োজনে আতশবাজির কারণে দুর্ঘটনা ও অগ্নিকাণ্ড এড়াতে সতর্কতা জারি করা হয়। হাসপাতাল ও পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়। ফিলিপাইনে বড়দিনের অনুষ্ঠানের পর থেকে গতকাল রাত পর্যন্ত আতশবাজির কারণে ১৮৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.