খবর শুধু খবর নয় by নিয়ামত হোসেন

কনে পক্ষ লাপাত্তা বর চলেছে বিয়ে করতে কনের বাড়িতে। সঙ্গে জনা পঞ্চাশেক বরযাত্রী। সবার মনে দারুণ উৎসাহ। কনের বাড়িতে পৌঁছাতে পারলেই মহা আয়োজন। উষ্ণ সংবর্ধনা। আন্তরিক আপ্যায়ন। রসনা লোভন খানা পিনা। দারুণ হবে। মহা উৎসাহে বরপক্ষ পৌঁছাল করেন বাড়ি। কিন্তু কী আশ্চর্য! কোথায় লোকজন?


কোথায় আপ্যায়ন! কেউ নেই যেখানে। কনের বাড়ির দরজায় তালা। বরপক্ষের সবাই হতভম্ব! কী হলো, লোকজন সব গেল কোথায়! বিয়ে কি তাহলে হবে না? বিয়ের জন্য কনে পক্ষকে দেয়া হয়েছিল বিপুল পরিমাণ টাকা! সব কি পানিতে গেল!
অনেক খোঁজাখুঁজি হলো কনে পক্ষের কাউকে পাওয়া গেল না। বোঝা গেল, কনে লাপাত্তা। পালিয়েছে বাপ-মাসুদ্ধ তার পুরো পরিবার! ভেগেছে তারা বর পক্ষের দেয়া সব টাকা নিয়ে।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের জয়পুর রাজ্যের এক শহরে। প্রকাশিত এক সংবাদে জানা গেল এ কথা। জানা গেল বিয়ের জন্য বরপক্ষ কনে পক্ষকে দিয়েছিল ৩ লাখ ৭৫ হাজার রুপি। অর্থাৎ সে দেশের টাকায় পৌনে চার লাখ টাকা। সেই অর্থসহ উধাও হয়ে গেছে কনেও তার বাপ-মা। বরের বিয়ে করা দূরের কথা, এখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় নেই। বর বেচারা কি আর করবে। ফিরে গেল নিজের বাড়িতে। দুই ব্যক্তি ঘটকালি করেছিল বিয়ের। বরপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলল। পুলিশ এরই মধ্যে আটক করেছে এক ঘটককে। পুলিশ সন্দেহ করছে বিষয়টি আসলে প্রতারণা। বর পড়েছিল এক প্রতারক চক্রের ফাঁদে। ঘটক এবং কনেপক্ষ সবাই প্রতারক চক্রের সদস্য। বিয়ের কথা বলে এরা প্রতারণার ফাঁদ পাতে। সেই ফাঁদে পা দিয়েছিল এই বর।
মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা, প্রবঞ্চনা করা, মানুষকে ঠকানো এগুলো বদ স্বভাবের মানুষের কাজ। এটাই তাদের অভ্যাস তথা বদভ্যাস। তবে শুধু অভ্যাসের মধ্যে ফেললেই চলে না, এটা অপরাধ! এই অপরাধের কাজটাই জয়পুরে করা হয়েছে উল্লিখিত বিয়ের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে বরের অবস্থা বড়ই করুণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিয়ে পাগল বা বিবাহেচ্ছু যিনিই হোন বিয়ের আগেই অতগুলো টাকা হাতছাড়া করা যে উচিত হয়নি সেটা বলতেই হয়! বিয়ের আসরে বিয়ে পড়ানোর সঙ্গে টাকা দেয়া হবে। এমন শর্ত দিলে হয়ত ঠকতে হতো না। ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ অর্থাৎ আগে বিয়ে পরে টাকা এই শর্ত দিলে বিয়ে হোক বা না হোক অন্তত অতগুলো টাকা হারাতে হতো না।

এক বই চোরের কথা
জাপানী এক ব্যক্তি। চাকরি বাকরি করেন। হঠাৎ একদিন জানা গেল, তিনি আরও একটা কাজ করেন। তিনি চুরি করেন। তবে টাকাকড়ি চুরি নয়। তিনি বই চোর। লাইব্রেরিতে লাইব্রেরিতে ঘোরেন এবং সেসব লাইব্রেরি থেকে বই চুরি করেন। সম্প্রতি এক লাইব্রেরিতে বই চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি। লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তারপর আস্তে আস্তে বের হয় তার কাহিনী। প্রকাশিত এক খবরে জানা গেল এ কথা।
বইচোরের নাম মিৎসুকা। ষাটোর্ধ বয়স। ৭ বছর ধরে বিভিন্ন লাইব্রেরি থেকে বই গায়েব করে চলেছেন। এ পর্যন্ত তিনি এক হাজার এক শ’ সত্তরটি বই চুরি করেছেন। চুরি করা বইগুলো বাড়িতে লাইব্রেরির মতো সাজিয়ে রেখেছেন। পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে এসব তথ্য উদঘাটন করেছে। জানা গেছে, এই ব্যক্তি বই ভালবাসেন অর্থাৎ পছন্দ করেন। বই চুরি করেছেন পড়ার জন্য নয়। তার কাছে রেখে দেয়ার জন্য। তাই চুরির কাজে হাত দিয়েছিলেন।
কথায় আছে চুরি বিদ্যা বড়ো বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা, জাপানী পুস্তক চোর চালিয়ে যাচ্ছিলেন তার পছন্দের কারবার। কিন্তু বেশিদিন চলল না, অবশেষে একদিন ধরা পড়লেন। অপরের দ্রব্য না ‘বলিয়া লইলে’ তাকে চুরি করা বলে। বই দ্রব্যটি এতকাল ধরে ‘তিনি না বলে নিয়েছেন অর্থাৎ চুরি করেছেন। এখন তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। দুর্ভাগ্য এই চোরের তিনি জ্ঞানবস্তু বা জ্ঞানের আধার চুরি করেছেন। কিন্তু জ্ঞানচর্চা করেননি।

No comments

Powered by Blogger.