হলিউড- পৃথিবীর ভবিষ্যৎ অ্যালিসের হাতে

অ্যালিস মানে অ্যালিস ইন দ্য ওয়ান্ডারল্যান্ড-নামের শিশুতোষ রূপকথার সেই কিশোরী নয়। এই অ্যালিসের বাস ভয়ংকর এ পৃথিবীতে। হ্যাঁ, আমাদের চিরচেনা স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসা; লোভ-বিদ্বেষ-ঘৃণার এই পৃথিবী তত দিনে একেবারেই পাল্টে গেছে; হয়ে উঠেছে ভয়ংকর।


টি-ভাইরাস নামের নিরীহ এক ভয়ংকর ভাইরাস পৃথিবীর মানুষকে বানিয়ে ফেলছে মাংসখেকো অমর দানব আনডেডে।
আমব্রেলা করপোরেশনের কুৎসিত এই অভিলাষ শেষ পর্যন্ত সত্যি হবে, নাকি বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে মানুষ? যে মানুষ অমর নয়; কিন্তু নরখেকো দানবও তো নয়! যে মানুষের মন শুধু হিংসার কালো ধোঁয়ায় ভর্তি নয়; যে মানুষের মনে আছে ভালোবাসার আর্দ্র মেঘও!
থ্রিলারধর্মী বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি-প্রেমীদের কাছে রেসিডেন্ট এভিল খুবই ভালোবাসার একটি নাম। এই সিরিজের আগের চারটি ছবির সাফল্যের পথে হাঁটতে আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে রেসিডেন্ট এভিল: রিট্রিবিউশন। অভিন্ন নামে ক্যাপকমের ভিডিও গেম থেকে বানানো এই চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালে। রেসিডেন্ট এভিল সিরিজ রিট্রিবিউশন দিয়ে পূর্ণ করছে সাফল্য-যাত্রার এক দশকও। সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয়টি বাদে প্রথম ও পঞ্চম চলচ্চিত্র দুটি পরিচালনা করেছিলেন যিনি, পল অ্যান্ডারসনও এই চলচ্চিত্র দিয়ে হ্যাটট্রিক করে ফেললেন।
এতে দেখা যাবে, আমব্রেলা করপোরেশনের ভয়ংকর টি-ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। পৃথিবীর মানুষকে আনডেড বানিয়ে ফেলছে। মানবজাতির শেষ ভরসা অ্যালিস জেগে উঠে দেখবে, সে আসলে আমব্রেলার সবচেয়ে গুপ্ত স্থানেই আছে। এখানেই সে নিজের রহস্যমাখা অতীত সম্পর্কে জানবে আরও কিছু তথ্য। এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে কারা আছে, তাদের খুঁজে বের করতে চাইবে অ্যালিস। এই অভিযানে সে ছুটবে টোকিও থেকে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন থেকে মস্কো। আর এই অভিযানের যোগফল তাকে দাঁড় করিয়ে দেবে বিস্ময়কর এক সত্যের সামনে। এত দিন সে সত্য বলে অনুমান করে এসেছিল যা কিছু, সেসবই শিকড়সহ উপড়ে পড়া গাছের মতো ধসে পড়বে তার সামনে।
এদিকে আমব্রেলার হর্তাকর্তারা বসে নেই। তারা তাদের মিশন চালিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী প্রবেশ করতে যাচ্ছে অন্ধকার এক যুগে। মানবজাতি একেবারে ধ্বংসের দুয়ারে দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ছে। শুরু হয়েছে ক্ষণগণনা। অ্যালিস তার পরিবার, মিত্র আর বন্ধুদের ছোট্ট কিন্তু প্রবল সাহসী একটা দল নিয়ে নেমে পড়েছে যুদ্ধে। ধ্বংসের হাত থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতেই হবে!
এই হলো সংক্ষেপে চলচ্চিত্রের গল্প। এবারও যথারীতি অ্যালিস চরিত্রে আছেন মিলা ইয়োভাভিচ। জাপানের দর্শকেরা অবশ্য এই অর্থে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান, কারণ সেখানেই প্রথম মুক্তি দেওয়া হয়েছে চলচ্চিত্রটি। ৩ সেপ্টেম্বর। এ উপলক্ষে সূর্যোদয়ের দেশে এসে ঘুরে গেলেন ইয়োভাভিচ। সেখানেই সাংবাদিকদের বলেছেন, এই চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয়ের দীর্ঘ যাত্রাকে সব মিলিয়ে মনে হয় যেন একটা অ্যাডভেঞ্চার।
‘এই সিরিজটি করা আসলেই যেন একটা অ্যাডভেঞ্চার। এই অবিশ্বাস্য, দুর্দান্ত, জাদুকরি রেসিডেন্ট এভিলের পৃথিবীতে ফিরে আসা, অ্যালিস হয়ে ফিরে আসাটা সব সময়ই অবিশ্বাস্য একটা অনুভূতির জন্ম দেয়।’ বলেছেন রাশিয়ায় জন্মেও মার্কিন হয়ে যাওয়া এই অভিনেত্রী।
ইয়োভাভিচের নিজের বয়সের ক্যালেন্ডারে ৩৬ চলছে। তবে অ্যালিস চরিত্রটির মতোই তিনি নিজেকে উদ্দাম এক তারুণ্যেই খুঁজে পান। অ্যালিস চরিত্রকে এখন নাকি নিজের আসল চরিত্রের চেয়েও বেশি করে চেনেন, ‘আমি এখন ওকে খুব ভালো করে চিনি। জানি ও কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, ও কী করবে, কী করতে চায়। ও আমার জীবনের অনেক বড় একটা অংশ হয়ে গেছে। আমার বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সেও বেড়ে উঠেছে। আমি নিজেও রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষা করছি তার জীবন এখন কোন দিকে বাঁক নেয়, তা দেখার জন্য।’
 রাজীব হাসান
হলিউড রিপোর্টার অবলম্বনে

No comments

Powered by Blogger.