যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সুদান ও তিউনিসিয়া ছাড়ার নির্দেশ

সুদান ও তিউনিসিয়ায় অবস্থানকারী অতিগুরুত্বপূর্ণ নয় এমন মার্কিন কূটনীতিক ও তাঁদের পরিবারকে দূতাবাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশ দুটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ভ্রমণের বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে গত শনিবার এ কথা জানানো হয়।


যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত 'ইনোসেন্স অব মুসলিমস' নামের ইসলামবিদ্বেষী একটি চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভের ঝড় উঠেছে মুসলিম বিশ্বে। এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার তিউনিসিয়া ও সুদানের মার্কিন দূতাবাসে হামলার ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়। এর আগে লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের এক কনস্যুলেটে হামলায় প্রাণ হারান রাষ্ট্রদূত জে ক্রিস্টোফার স্টিভেনস। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দূতাবাসের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র মেরিন সেনা পাঠাতে চাইলে সুদান তা নাকচ করে দিয়েছে। খার্তুম জানিয়েছে, কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামর্থ্য সুদানের আছে।
ইনোসেন্স অব মুসলিমসের নিন্দায় মুসলিম দেশগুলোর পাশাপাশি জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতেও বিক্ষোভ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, সুদান সরকার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এখনো পশ্চিমা স্বার্থে হামলার হুমকি দিচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড জানান, তিউনিসিয়া সফরের ব্যাপারেও মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে। 'তিউনিসিয়ায় অবস্থানকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা এবং বিক্ষোভ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।'
এদিকে কানাডার সরকার আগাম সতর্কতা হিসেবে গতকাল রবিবার থেকে সুদান, লিবিয়া ও মিসরে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাগারিফ গত শনিবার জানিয়েছেন, বেনগাজিতে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে যে হামলা হয়েছে, সেখানে লিবীয়দের পাশাপাশি বিদেশিরাও অংশ নিয়েছে। তিনি জানান, তাঁদের কাছে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে এ ধারণা করা হচ্ছে। তবে কোন দেশের নাগরিক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। এর আগে এ হামলার দায় স্বীকার করে আল-কায়েদা। তারা যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
মিসরের প্রধানমন্ত্রী হিশাম কান্দিল গত শনিবার বলেছেন, ইসলামকে যারা 'অপমান' করছে, তাদের থামাতে যুক্তরাষ্ট্রকে সম্ভব সব ব্যবস্থা নিতে হবে। মহানবী (সা.)-এর অপমান বরদাশত করা হবে না। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সহিংসতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অধিকারও কারো নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সিনেমাটির নির্মাতাদের নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি। অনলাইনে ভিডিও দেখার জনপ্রিয় মাধ্যম ইউটিউবে দেওয়া ছবিটির ১৪ মিনিটের ক্লিপিং স্যাম বাসেলে নামে এক ব্যক্তি ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এই নামে কোনো নির্মাতার খোঁজ পায়নি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী। স্যাম বাসেলে সন্দেহে নাকুলা বাসেলে নাকুলা নামে এক ব্যক্তিকে গত শুক্রবার আটক করা হলেও শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। সূত্র : বিবিসি, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.