গোলাম মুরশিদের বিচার দাবি করেছে জাতীয় কবির পরিবার

সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে ড. গোলাম মুরশিদের  বিতর্কিত মন্তব্যে  ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে কবি পরিবার। এ বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন, কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে তার বিচার দাবি করেছেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী।
খিলখিল কাজী গণমাধ্যমকে পাঠানো এক প্রতিবাদপত্রে বলেছেন, “জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, তাঁর মা জাহেদা খাতুন ও স্ত্রী প্রমীলা নজরুল ইসলামের চরিত্র হনন করে যে ভিত্তিহীন, আপত্তিকর, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন গোলাম মুরশিদ আমি ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখ্যান করছি।”
তিনি আরো বলেন, “আমি বিস্মিত হয়েছি যে, সেদিনের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মোস্তাফা নূরউল ইসলাম সে বক্তব্যের কোনো প্রতিবাদ করেননি। তাদের ভূমিকাকে আমি ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করতে বাধ্য হচ্ছি।”

ড. গোলাম মুরশিদ তার ‘ভিত্তিহীন ও আপত্তিকর বক্তব্যের জন্য এখনও জনগণ ও নজরুল অনুরাগীদের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা না করা’য় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এর আগে আবদুল গাফফার চৌধুরী ও রেজাউল করিম তালুকদার একইভাবে জাতীয় কবি ও তার পরিবারের ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করেছেন। তাদের সেই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ড. গোলাম মুরশিদের মতো ব্যক্তিরা অতি উৎসাহী হয়ে গবেষণার নামে সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করতে চাচ্ছেন।”

তিনি এ ঘটনায় সরকারের কাছে তার বিচার ও শাস্তি দাবি করেছেন। পাশাপাশি বাংলা একাডেমীসহ দেশের সরকারি-বেসরকারি শিল্প-সাহিত্য-গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া কবি পরিবার গোলাম মুরশিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি ।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বাংলা একাডেমীর আয়োজনে ‘নজরুল ইসলাম: একটি আদর্শ জীবনীর খোঁজে’ শিরোনামের একক বক্তৃতা করেন ড. গোলাম মুরশিদ।  সেখানে তিনি বলেন, ‘প্রমীলা বিয়ের আগেই গর্ভবতী হয়ে যান। বিয়ের সময় তিনি ৫ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। বিয়ের ৪ মাস পরে তিনি প্রথম সন্তানের জন্ম দেন’।

একটি দৈনিকে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, “ড. গোলাম মুরশিদের দেয়া বক্তব্য বাংলা একাডেমীর নয়; এটা তার নিজস্ব বক্তব্য। তবে আমাদের অনুষ্ঠানে এ ধরনের বক্তব্য দেয়ায় আমরা বিব্রতবোধ করেছি। একাডেমীর সভাপতি অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান তখন দেশে না থাকায় আমরা বিষয়টি নিয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু করতে পারিনি। তিনি দেশে এসেছেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে আবার আলোচনা হবে। এর আগে তার সঙ্গে টেলিফোনে বিষয়টি নিয়ে আমার কথা হয়েছে। ড. গোলাম মুরশিদকে বাংলা একাডেমীর কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাকে আর কখনও একাডেমীর কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে না।”

1 comment:

  1. বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তার পরিবার সম্পর্কে বাংলা একাডেমীতে অধ্যাপক ড. গোলাম মুরশিদের দেয়া নোংরা বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী। ড. মুরশিদের বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে কবি পরিবারের পক্ষ থেকে খিলখিল বলেন, ‘তার বক্তব্য ভিত্তিহীন, কুরুচিপূর্ণ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ জাতীয় কবিকে নিয়ে এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের জন্য ড. মুরশিদের বিচার দাবি করেন তিনি। আপত্তিকর বক্তব্যের পর দেশ-বিদেশে প্রতিবাদের পরও ড. মুরশিদ ক্ষমা না চাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন খিলখিল। তিনি বলেন, ‘জাতীয় কবি ও তার পরিবারের ভাবমর্যাদা বিনাশের অপচেষ্টা আর জাতির ভাবমর্যাদা বিনাশের অপচেষ্টা একই কথা।’ মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের বিরুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ড. মুরশিদের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে কবি পরিবার।’
    গতকাল দেশের গণমাধ্যমগুলোতে পাঠানো এক বিবৃতিতে খিলখিল বলেন, ‘গত ২৭ আগস্ট জাতীয় কবির ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমী আয়োজিত একক বক্তৃতায় ড. মুরশিদ জাতীয় কবি, তার মা মহীয়সী জাহেদা খাতুন ও তার স্ত্রী প্রমীলা নজরুল ইসলামের চরিত্র হনন করে ভিত্তিহীন, আপত্তিকর, কুরুচিপূর্ণ যে বক্তব্য রেখেছেন, সে বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। আমি বিস্মিত হয়েছি এ কথা জেনে, বাংলা একাডেমীর সেদিনের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেও একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মুস্তাফা নূরুল ইসলাম সে বক্তব্যের কোনো প্রতিবাদ করেননি। তাদের ভূমিকাকে আমি অত্যন্ত দুঃখজনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে অভিহিত করতে বাধ্য হচ্ছি।’
    বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমীসহ দেশের সব সরকারি-বেসরকারি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আমার আবেদন—ড. মুরশিদকে আপনারা কালো তালিকাভুক্ত করুন এবং তার সঙ্গে সব সংশ্লিষ্টতা পরিহার করুন। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের বাঙালি সংস্কৃতির সব অঙ্গনে তাকে বয়কট করুন।
    তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ও রেজাউল করিম তালুকদার একইভাবে জাতীয় কবি ও তার পরিবারের ভাবমর্যাদা বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করেছেন। তাদের সেই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ড. গোলাম মুরশিদের মতো ব্যক্তিরা অতি উত্সাহী হয়ে গবেষণার নামে সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করতে চাচ্ছেন। সরকারের কাছে আমার আবেদন, জাতির ভাবমর্যাদা বিনষ্টের অপচেষ্টার জন্য অবিলম্বে ড. গোলাম মুরশিদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করুন।’

    ReplyDelete

Powered by Blogger.