স্বরাষ্ট্র ছাড়া নতুন মন্ত্রীরা কাজে যোগ দিয়েছেন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ছাড়া নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ গতকাল রবিবার নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে অফিস করেন।


তবে আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন দেশে না থাকায় নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর মন্ত্রণালয়ে যাননি। যুক্তরাষ্ট্র সফররত সাহারা খাতুন আজ দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে। নতুন মন্ত্রীরা কাজে যোগ দিয়ে পুরনো মন্ত্রীদের কাজের প্রশংসা করে তা চালিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
সকাল সাড়ে ১১টায় তথ্য মন্ত্রণালয়ে যান হাসানুল হক ইনু। সঠিক তথ্য জনগণের কাছে তুলে ধরা এবং অসৎ সাংবাদিকতাকে নিরুৎসাহ করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'সঠিক তথ্য জনগণের কাছে তুলে ধরা এবং খণ্ডিত তথ্য, মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন, তথ্য আড়াল করা, অসৎ তথ্য প্রচার ও অসৎ সাংবাদিকতাকে নিরুৎসাহ করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করব।' সাবেক তথ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করে নতুন তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'শক্ত জমিনের ওপর দাঁড়িয়ে দায়িত্ব শুরু করলাম। বেশি বেগ পেতে হবে না। যে জায়গাটা তৈরি করে গেছেন তা আরো সুন্দর ও শক্তিশালী করব।' সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো সহায়তা দরকার হলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তা করা হবে বলে জানান তিনি।
এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস তাঁকে স্বাগত জানান। এর পরেই ইনু চলে যান নিজের নতুন দপ্তরে। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, যিনি তথ্য মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিদায়ী তথ্যমন্ত্রী আবুল কলাম আজাদ গত তিন বছর আট মাসে তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের জন্য সর্বোচ্চ কাজ করেছে বলে দাবি করেন।
প্রথম দিন কার্যালয়ে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় নিজের দপ্তরে পৌঁছালে সচিব এম আসলাম আলম ও কর্মকর্তারা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। এই অগ্রগতি ধরে রাখতে এবং কাজের মধ্য দিয়ে মন্ত্রণালয়কে আরো এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চান তিনি। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় রদবদলের পর খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ভেঙে দুটি আলদা মন্ত্রণালয় করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণের দায়িত্ব পান মাহমুদ আলী। আর খাদ্যের দায়িত্ব থাকে আগের মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের ওপর।
রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক তাঁর দপ্তরে যান সকাল সোয়া ১০টার দিকে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে স্বাগত জানান। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার বিশ্বাস, আজ থেকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কোনো দুর্নীতি হবে না। দুর্নীতি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।' কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে নতুন মন্ত্রী বলেন, 'আমি আলস্য অপছন্দ করি। যে পরিশ্রম করবে না, সে এই মন্ত্রণালয়ে থাকতে পারবে না।' সময়মতো রেল চলাচল, টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য থাকবে বলে জানান মন্ত্রী।
সকাল সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে যান নতুন মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান তাঁকে স্বাগত জানান। মন্ত্রী পরে সেমিনার হলে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আবদুল হাই গতকাল দুপুরে মন্ত্রণালয়ে যান। এ সময় মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস তাঁর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে নতুন প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
গত বৃহস্পতিবার নতুন পাঁচ মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী শপথ নেওয়ার পর শনিবার তাঁদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

No comments

Powered by Blogger.