বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে ॥ আশরাফুল

শোকার্ত মানুষের প্রবল দাবির প্রেক্ষিতে জাতিকে আশ্বস্ত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীরা কে কোথায় আছে আমরা তা জানতে পেরেছি। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত এসব খুনীকে দেশে ফিরিয়ে এনে যথাসময়ে দ- (ফাঁসির রায়) কার্যকর করা হবে।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনও একই ধরনের আশ্বাস দিয়ে বলেন, সাজাপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনী বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের অবশ্যই ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।
বুধবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সরকারের এ দুই শীর্ষনেতা এ মন্তব্য করেন। এবারে বঙ্গবন্ধুর ৩৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে সারাদেশেই উঠেছিল একই দাবিÑ অবিলম্বে পলাতক খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক, জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা হোক।
বনানী কবরস্থানে বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিহত সদস্যদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দ আশরাফ বলেন, জাতীয় শোক দিবসকে জাতীয় শক্তিতে পরিণত করতে হবে। এর মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রের অগ্রাযাত্রাকে এগিয়ে নেয়ার ভিত আরও শক্তিশালী করা হবে।
দুপুরে মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৭তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মোশতাক-জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করায় ২১টি বছর আমরা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করতে পারিনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি বাতিল করে বিচার শুরু করে। খুনীদের সাজা হলেও পরবর্তী সরকার রায় কার্যকর নিয়ে টালবাহানা করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পরে ৫ খুনীর ফাঁসি দেয়া হয়েছে।
১৫ আগস্টের হত্যাকা-কে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খুনীরা ষড়যন্ত্র থেকে সরে যায়নি। তারা শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করেছে। ছাত্রছাত্রীদের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজকের জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের সময় আল বদর, আল শামস্ বাহিনী গঠন করে পাকবাহিনীর হাতে মুক্তিযোদ্ধা এবং মা-বোনদের তুলে দিয়েছিল। আজ যখন তাদের বিচারের কাজ শুরু হয়েছে তখন বিএনপি-জামায়াত বিভিন্ন ছলছুতায় আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে, বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কাজ করছে। গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ যাতে তারা না করতে পারে সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাহারা খাতুন আরও বলেন, আগের মতো দেশে গ্রেনেড-বোমা হামলা নেই। আর কোনভাবে যাতে আর জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মনিপুর স্কুলের গবর্নিংবডির সভাপতি সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের সভাপতিত্বে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেনসহ স্কুলের শিক্ষকরাও এ সময় বক্তব্য রাখেন। পরে মন্ত্রী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ চলচ্চিত্রটি দেখেন।

No comments

Powered by Blogger.