নির্যাতনের শিকার হলে... by নাঈমা আমিন

ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসায় গৃহকর্মীর কা করত রহিমা (১৫) (ছদ্মনাম)। যে বাসায় সে গৃহকর্মীর কা করত, সেখানকার গৃহকর্ত্রী তাকে প্রতিদিনই মারধর করতেন, গালিগালা তো রয়েছেই। প্রতিদিনকার মারধর সহ্য করতে না পেরে একদিন রাতে ওই বাসা থেকে পালিয়ে যায় রহিমা।


স্থানীয় থানার পুলিশ তাকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় এবং থানায় এাহার করে পাঠিয়ে দেয় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। পরে রহিমা তার নির্যাতনের কথাগুলো ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে ানালে এই প্রতিষ্ঠান থেকে ওই বাসায় যোগাযোগ করা হয়; বাসার গৃহকর্তা আর গৃহকর্ত্রী রহিমার ওপর নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন। ইতিমধ্যে ওই বাসার গৃহকর্ত্রী রহিমার মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের ানান, রহিমা ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে আছে এবং তাঁরা যেন সেখানে গিয়ে রহিমাকে নিয়ে যান। রহিমার মা-বাবা অবশেষে এই সেন্টারে আসেন মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার ন্য। অবশেষে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার নিস্ব উদ্যোগে ওই পরিবারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ তুলে দেয় রহিমার পরিবারের কাছে। এমনই হাারো নির্যাতনের ঘটনা আমাদের সমা েপ্রতিদিনই ঘটে চলেছে। আর এসব নির্যাতনের শিকার বিভিন্ন বয়সী নারী ও শিশুদের আইনি সহায়তা ও সুরক্ষা দেওয়ার ন্য ২০০৯ সাল থেকে কা করে যাচ্ছে ‘ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার’। এ প্রতিষ্ঠানের ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার মীনা মাহমুদা ানান, ভিকটিমকে সুরক্ষা ও আইনগত অধিকার রক্ষা, বারবার নির্যাতনের হাত থেকে সুরক্ষা, পেশাগত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি কা করে যাচ্ছে।

যেভাবে আবেদন করতে হবে
প্রতিদিন ঘটছে নারী ও শিশু পাচার, এসিডদগ্ধ, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনা। নারী ও শিশুর প্রতি এ ধরনের যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হলে নির্যাতিতা সরাসরি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে এসে বা প্রয়োনে টেলিফোনে বিষয়টি অবহিত করতে পারেন। ভিকটিম সরাসরি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে এসে ডিউটি অফিসারের কাছে ‘এসি, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার’ বরাবর আবেদন করতে পারেন। ভিকটিম যদি অক্ষরজ্ঞানহীন হন, তবে ডিউটি অফিসার তাঁকে আবেদন করতে সহায়তা করে থাকেন। ডিউটি অফিসার প্রথমে নি েসরাসরি কথা বলে ভিকটিমের কাছ থেকে তাঁর সমস্যা সম্পর্কে নে তাঁর সমস্যা অনুযায়ী প্রথমে তাঁর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে থাকেন এখানকার ‘হেফাতকক্ষে’। এরপর প্রয়োন অনুযায়ী তাঁকে চিকিসা, আইনি সহায়তা দেওয়ার ন্য উপদেশ এবং কাউন্সেলিং করা হয়ে থাকে। পেশাগতভাবে সহায়তার ন্য তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে, যেন তিনি স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন। ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকেও ভিকটিমদের এ সেন্টারে পাঠানো হয়। ঢাকার যেকোনো থানা থেকে ভিকটিমকে পাঠালে সে ক্ষেত্রে এাহারের কপি ভিকটিম বা নির্যাতিতার সঙ্গে পাঠাতে হয় এ সেন্টারে। প্রয়োনে ভিকটিমকে এখানকার হেফাতকক্ষে রাখা হয়। তবে পাঁচ দিনের বেশি কোনো ভিকটিমকে এখানে রাখা হয় না।
তবে আগে যেটি শুধুই ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার ছিল, এখন তা করা হয়েছে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন। এর অধীনে আনা হয়েছে তিনটি উইং; ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (যাঁরা তদন্তের কা করে থাকেন), কুইক রেসপন্স টিম (যাঁরা নারী ও শিশুর সঙ্গে ড়িত অভিযোগগুলোর দ্রুত সমাধান করে থাকেন) এবং ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার।
ভিকটিমকে পেশাগত ও সমন্বিতভাবে সেবা প্রদানের ন্য এ সেন্টারের সঙ্গে কা করে যাচ্ছে ১০টি সহযোগী সংস্থা। এসব সংস্থার আইনীবী, চিকিসক, কাউন্সিলররা প্রতি সপ্তাহে এ প্রতিষ্ঠানে আসেন এবং ভিকটিমকে প্রয়োনীয় সহায়তা দিয়ে থাকেন। নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুকে সময়োপযোগী ও পেশাগত সেবা প্রদানের মাধ্যমে স্বাভাবিক ীবনে ফিরিয়ে আনার ন্য ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার তার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। যোগাযোগের ঠিকানা: ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, (তেগাঁও থানাসংলগ্ন), তেগাঁও, ঢাকা ফোন: ৯১১০৮৮৫।

No comments

Powered by Blogger.