পুরোনো চেহারায় ফিরছে নগর by মেখ্যাইউ মারমা

সড়কে চলছে রিকশা, ট্যাক্সি, বাস আর টেম্পো। মোড়ে মোড়ে শুরু হয়েছে যানজট ও জনজট। অফিস-আদালত, ব্যাংকপাড়ায় চলছে লোকজনের আনাগোনা, লেনদেন। নগরের বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রসহ খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। এভাবেই ঈদের আগের অর্থাৎ পুরোনো চেহারায় ফিরছে নগর।


ঈদের ছুটি, সরকারি সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ১১ দিন ছুটি পেয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য গ্রামে ছুটে গিয়েছিলেন নগরে বসবাসকারী লোকজন। ফলে বেশ কয়েক দিন নগরের বিপণিকেন্দ্র, আবাসিক এলাকা, অফিস-আদালত ও রাস্তাঘাট ছিল প্রায় ফাঁকা। ছুটি শেষে তাঁরা ধীরে ধীরে নগরে ফিরেছেন। এ অবস্থায় আবার সেই পুরোনো চেহারা ফিরে পেয়েছে নগর।
ঈদের সময় নগরে থাকা জামালখান এলাকার বাসিন্দা পৌলমি মজুমদার বলেন, ‘ঈদ যত ঘনিয়ে আসছিল, তত ফাঁকা হয়ে আসছিল নগর। চেনা যাচ্ছিল না চিরচেনা শহরকে। কোলাহলমুক্ত পরিবেশ ভালোই লাগছিল। এখন আবার সেই আগের মতো হয়ে আসছে সবকিছু। সেই ভিড়, সেই দুর্ভোগ আবার চেপে বসছে নগরবাসীর ঘাড়ে।’
১৫ আগস্ট বুধবার থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা ১১ দিন ছুটি কাটিয়েছেন নগরবাসী। এর মধ্যে ১৫ আগস্ট রোববার বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী এবং পরদিন ১৬ আগস্ট সোমবার পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে ছিল দুই দিনের সরকারি ছুটি। বৃহস্পতিবার অর্ধদিবসে অনেকেই ছুটি নিয়ে নেন। এর সঙ্গে তিন দিনের ঈদের ছুটি এবং ১৯ তারিখ চাঁদ দেখা যাওয়ায় বাড়তি আরেকটি দিন যোগ হয় ঈদের ছুটির খাতায়। আবার অনেকে বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দিনের ছুটি নিয়ে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে ফিরে আসছেন নগরে।
এ ছাড়া বিদ্যালয়-কলেজগুলোও খুলছে আজ থেকে। এ উপলক্ষে অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও চলে আসছেন শহরে নিজেদের বাসায়।
বেসরকারি একটি কিন্ডারগার্টেনের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুনিয়ার মা সহেলি জান্নাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চার পড়ালেখার অনেক চাপ। সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। রোববারই স্কুল খুলবে। তা ছাড়া আছে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ার শিডিউল। তাই ঈদের পর তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে চলে এসেছি।’
এদিকে কর্মব্যস্ততায় মুখর হয়ে উঠেছে অফিস-আদালত ও ব্যাংকপাড়া। গ্রামের বাড়িতে ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসা ষোলশহর এলাকার বাসিন্দা ও বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ঈদের ছুটি ছাড়াও সরকারি ছুটি আর নৈমিত্তিক ছুটি মিলিয়ে আট দিনের ছুটিতে পটিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ঈদ করেছি। পরদিন পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছি বান্দরবানে। এরপর শহরে ফিরে কর্মস্থলে যোগ দিলাম।’ এদিকে ঈদ উপলক্ষে ব্যাপক বেচাকেনার পর ঈদে কয়েক দিনের জন্য বন্ধ হয়ে থাকা নগরের বিপণি কেন্দ্রগুলোও ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। তবে বেশির ভাগ বিপণিকেন্দ্রে এখনো ঈদের ছুটির আমেজ কাটেনি। বড় বড় বিপণিকেন্দ্রগুলো এখনো বন্ধই দেখা গেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে রিয়াজউদ্দিন বাজারে গিয়ে দেখা যায় কয়েকটি দোকান খুললেও সেখানে কোনো ক্রেতা নেই। ক্রেতা সমাগম না হওয়ায় বেচাকেনা হচ্ছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
নগরের অভিজাত বিপণিকেন্দ্র সানমার ওশান সিটি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদ ইফতেখার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের বেচাকেনা শেষ হওয়ার পর থেকে মার্কেট বন্ধ রয়েছে। মালিক-কর্মচারীরা এখনো নিজ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।’ আগামী বুধবার সানমার ওশান সিটি খোলা হবে বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.