মুখে নয় অন্তর দিয়ে ভালোবাসতে হবে by এইচএম আবদুল আলিম

আমাদের দেশে প্রতি বছর জন্ম নিচ্ছে অনেক প্রতিবন্ধী বা বিশেষ শিশু। হুর মতে, এই শিশুরাসহ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর পরিমাণ মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০ ভাগ। কিন্তু প্রতিনিয়ত এদের পক্ষে-বিপক্ষে রয়েছে নানা মন্তব্য। আর লাঞ্ছনার স্বীকার হচ্ছেন এই শিশুদের বাবা-মা ও পরিজন। আমরা আগামী চতুর্থ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস এবং জাতীয়


প্রতিবন্ধী দিবস-২০১১তে সবাই একসঙ্গে অঙ্গীকারবদ্ধ হই, আমরা প্রতিবন্ধী শিশুদের শুধু মুখেই নয়, অন্তর থেকে ভালোবাসব।
আমরা একটু চেষ্টা করলেই বুঝতে পারব, এই বিশেষ শিশুদের আসলে আমাদের কতটা ভালোবাসা উচিত। আমরা প্রতিনিয়তই কোথাও না কোথাও প্রতিবন্ধী শিশুদের দেখতে পাই, হয় নিজের পরিবারের মধ্যে, না হয় প্রতিবেশীদের মধ্যে, নয়তো-বা কোনো না কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিতিজনদের মধ্যে। এসব শিশুকে দেখলে আমরা তাদের সঙ্গে সুন্দর করে কথা বলি না হয় আদর করে মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেই, এতেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায় না। সত্যিকারভাবেই তাদের আমরা ভালোবাসব। আমরা অনেকেই আছি যারা বিশেষ শিশুদের দেখলে খুব আগ্রহ নিয়ে কাছে যাই, কথা বলি। মনে হয় বিশেষ শিশুদের প্রতি আমাদের খুব ভালোবাসা; কিন্তু যখন শিশুটি একটু অদ্ভুত আচরণ করল, যা আমাদের মনে একটু কষ্টই লাগল, ওমনিই আমরা মন খারাপ করে বিরক্তি ভাব নিয়ে চলে আসি। যদি আমরা সত্যিকারভাবে বা অন্তর থেকে শিশুদের ভালোবাসি, তবে শিশুটির আচরণ আমাদের কাছে বিরক্তিকর মনে হবে না বরং তাদের সম্পর্কে জানার ইচ্ছা বৃদ্ধি পাবে।
আমাদের দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা বিশেষ শিশুদের নিয়ে কাজ করে। যখন কোনো বিশেষ শিক্ষক বা বিশেষ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউ কল করা হয়, তখন আমরা ইন্টারভিউ বোর্ডে অনেক ইতিবাচক কথা বলে থাকি। যখন জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি প্রতিষ্ঠানে-পেশায় কাজ করতে চান কেন? হয়তো আমরা উত্তরে বলে থাকি, বিশেষ শিশুদের নিয়ে কাজ করতে আমাদের ভীষণ ভালো লাগে। এছাড়া আমাদের বিশেষ চাহিদা সম্পূর্ণ শিশুদের প্রতি একটু অন্যরকম ভালোবাসা রয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে বলি, আমাদের পরিবারে বিশেষ শিশু রয়েছে, না হয় আমাদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে বিশেষ শিশু রয়েছে। নিয়োগের পর দেখা যায়, যারা সরাসরি বিশেষ শিশুদের সঙ্গে কাজ করি তাদের মধ্যে ২৫ ভাগ নিয়োগপত্র পাওয়ার আগে এবং নিয়োগপত্র পাওয়ার পর প্রথম ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ২৫ ভাগসহ ৫০ ভাগ শিক্ষক বা বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি থেকে চলে যাই। হয়তো কখনও বলে যাই, আবার কখনও না বলেই চলে যাই। কথাটা একেবারেই মিথ্যা নয়। যারা বিশেষ শিশু বা প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করেন তারা আরও ভালো জানেন। আমরা শুধুই টাকা বা সময় কাটানোর জন্যই বিশেষ শিশুদের সঙ্গে কাজ করব না বরং তাদের অন্তর থেকে ভালোবাসব। এ জন্য প্রয়োজন আমাদের ধৈর্য, ইচ্ছা ও সত্যিকারের মানসিকতা। প্রতিবন্ধীদের অন্তর থেকে ভালোবাসতে পারলে এবং তাদের প্রতিবন্ধকতাকে মেনে নিলেই মানসিক শান্তি পাওয়া যাবে_ এ জন্য তাদের লুকিয়ে নয়, তার অবস্থা বুঝে সবার মাঝে নিয়ে যেতে হবে। এতে হয়তো শিশুর উন্নয়নের জন্য কোনোভালো দিকনির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে।
 

No comments

Powered by Blogger.