এক রাতেই ৫০ বাড়ি পদ্মার গর্ভে বিলীন

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীর গ্রাসে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত এক মাসে সাত কিলোমিটার এলাকায় ১৫টি গ্রামের পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, বসত-ভিটা ও বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। গত শুক্রবার এক রাতেই ৫০টি ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।


অব্যাহত ভাঙনে চরম আতঙ্কগ্রস্ত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপারের ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ভাঙনের কবল থেকে বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেও দু-চারজন বাদে সবাই ব্যর্থ হয়েছে। দেখতে দেখতে রাক্ষুসী পদ্মা নদী তার পেটে গিলে নিচ্ছে নদীপারের বাড়িঘর ও জমিজমা।
এলাকাবাসী জানায়, প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনে গত চার দশকে সাঁড়া ইউনিয়নের অসংখ্য গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটেহারা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এর পরও ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঈশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুজুর আলী সরকার জানান, ব্রিটিশ আমলে একবার এ পদ্মায় এভাবে ভাঙন হয়েছিল। এরপর এত তীব্র ভাঙন আর হয়নি। তার পৈতৃক বাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিতে হচ্ছে। একই এলাকার জমসেদ আলী বলেন, ‘আমার পাকা ঘরবাড়ি ছিল কিছুদিন আগেও, এখন অন্যের জায়গাতে ছাপরা ঘর তুলে রয়েছি।’
সাঁড়া ইউপির চেয়ারম্যান জার্জিস হোসেন বলেন, আড়ামবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়, আড়ামবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শহীদ মিনারটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে হয়তো স্কুলগুলো ও শহীদ মিনারটি দেখা যাবে না। ভাঙনের তীব্র গতি ও ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে ইউনিয়নটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের অধিকাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কোমরপুর গ্রামের প্রবীণ কুমার ঘোষ, শ্যামল কুমার দত্ত, নজরুল ইসলাম ভাঙনের কবল থেকে বাড়িঘরের স্থাপনা রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার সকালে সাঁড়ার মাজদিয়া বড়পাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর বিলীন হয়েছে।
স্থানীয় সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ বলেন, নদীপারে বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে ইতিমধ্যে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.