বেচাকেনা বাড়ছে

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। গতকাল শনিবারও মেলায় ক্রেতা-দর্শকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এ ব্যাপক সমাগমে খোশমেজাজে আছেন আয়োজক, টিকিট বিক্রেতা আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে প্রতিদিনই মেলায় কিছু না কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। গতকাল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন মেলার বিলবোর্ডের ইজারাদার আবু সাদেক।


মেলামাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা স্টল থেকে স্টলে ছুটছেন। কেউ কিনছেন, কেউ দামদর করছেন। তবে পোশাক-পরিচ্ছদ, জুতা-স্যান্ডেল, জুয়েলারি, প্লাস্টিক পণ্য ও খাবার বিক্রি হচ্ছে বেশি। এ ছাড়া আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোনের স্টলগুলোতে ভিড় বেশি। এসব পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুন মডেলের পণ্য নিয়ে এসেছে। মেলা উপলক্ষে বেশকিছু নতুন পণ্য নিয়ে এসেছে নাভানা ফার্নিচার। প্রতিষ্ঠানটির মেলার ডেপুটি ইনচার্জ আরিফ ইসলাম সমকালকে জানান, আমরা যে পণ্যগুলোর ওপর ছাড় দিচ্ছি সেগুলো এখন পর্যন্ত শোরুমে যায়নি। ১৭ শতাংশ ছাড়ের মধ্যে কাঠের আসবাবপত্রে সর্বোচ্চ দেওয়া হচ্ছে। এরকম আরও নামিদামি ফার্নিচার কোম্পানি নগদ ছাড়, গিফট কুপন ইত্যাদি অফার দিয়ে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছে।
মেলায় আসা এক দর্শনার্থী জানান, প্রতিবারই তিনি এখানে আসেন এবং পণ্য কেনেন। তিনি আগে স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। দামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যত স্টলে গেছেন প্রায় সব পণ্যেরই দাম চড়া। এ বিষয়ে বিক্রেতারা বলেন, আমাদের পণ্যের গুণগত মানের কথা চিন্তা করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কিছু কিছু পণ্যের দাম বাড়লেও তা খুব বেশি নয়।
এদিকে অবৈধ বিলবোর্ড, খাবার দোকান স্থাপনের প্রতিবাদে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানানোর জন্য গতকাল দুপুরে একটি মিছিল নিয়ে মেলার সামনে আসেন। এ সময় তারা মিছিল নিয়ে প্রবেশ ফটকের ভেতরে ঢুকে পড়েন এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ সময় মেলার বিলবোর্ডের ইজারাদার মোঃ আবু সাদেকের সঙ্গে ছাত্রদের হাতাহাতি হয়।
পরে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। এ বিষয়ে শেকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি আ ন ম আহমাদুল বাশার বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ ছাড়া বাণিজ্যমেলার ভেতর চাঁদাবাজির কথা উল্লেখ করে তিনি কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ইপিবির টেন্ডার অনুযায়ী ওই ঠিকাদার ১০টি বিলবোর্ড স্থাপনের অনুমতি পেলেও স্থাপন করেছেন ২২টি। যার মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন। ঠিকাদার মোঃ আবু সাদেক জানান, ছাত্রলীগ কর্মীরা তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন; কিন্তু তিনি চাঁদা না দেওয়ায় তার ওপর হামলা করা হয়। তিনি দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
মেলার সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান খান ইরান জানান, মেলায় যারা আসেন তাদের যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা না যায় তবে মেলার সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মেলার সচিব এহসান কবির জানান, নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই। দরকার হলে
সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.