সেনাবাহিনীর সঙ্গে 'যুদ্ধে' নেই সরকার :জারদারি-পার্লামেন্টারি কমিটির সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হবে

দেশের সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকার 'যুদ্ধে' নেই বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। মেমোগেট কেলেঙ্কারিতে আদালত তদন্ত করলেও পার্লামেন্টারি কমিটির সিদ্ধান্তই সরকার গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর : এএফপি, এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমসের। গতকাল শনিবার পাকিস্তানের জিও টেলিভিশনে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, আমরা আদালতের সঙ্গে যুদ্ধে নেই। সামরিক বাহিনীর সঙ্গেও যুদ্ধে


নেই আমরা। এখানে কোনো যুদ্ধ চলছে না। তিনি বলেন, আপনারা এটিকে সংঘাত ভাবতে পারেন, কিন্তু আমি একে ক্রমবিকাশের অংশই বলব। এ সংঘাত আবর্তিত হবে এবং এক সময় শান্ত হয়ে যাবে। কয়েক মাস আগে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজ এক লেখায় প্রকাশ করেন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ক্যু করতে পারে এ আশঙ্কায় সেনাবাহিনীর ক্ষমতা সংকুচিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন জারদারি। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত তৎকালীন পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত হোসাইন হাক্কানির অনুরোধে মার্কিন প্রশাসনের কাছে একটি চিঠিও পেঁৗছে দেওয়ার দাবি করেন ইজাজ। গত বছরের ২ মে পাকিস্তানের গ্যারিসন শহর এবোটাবাদে মার্কিন কমান্ডো হামলায় আল কায়দার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর জারদারি এ আশঙ্কা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন ইজাজ। ওই চিঠির ঘটনা মেমোগেট কেলেঙ্কারি হিসেবে আখ্যা পেয়েছে। এ নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের ব্যাপক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে দেশ ত্যাগ করেন জারদারি। সেনাবাহিনী তাকে সরিয়ে দিয়েছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি জানান, জারদারির জীবননাশের শঙ্কা থাকায় তিনি দেশে চিকিৎসা নেননি। এরপর গুজব ছড়ায়, সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কায়ানি ও আইএসআই প্রধান আহমেদ সুজা পাশাকে সরকার অপসারণ করছে। এসব গুজবে কয়েক মাস ধরেই পাকিস্তানের সরকারে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়েছে। এক পর্যায়ে বিরোধী দল ও গোয়েন্দা প্রধান আদালতে মেমোগেটের তদন্তের দাবি জানালে একটি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। অন্যদিকে, সরকারও একটি পার্লামেন্টারি তদন্ত কমিটি গঠন করে। উভয় কমিটিই এখন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। দুটি কমিটির প্রতিবেদন দুই রকমের হলে কী করা হবে এ প্রশ্ন করা হলে জারদারি বলেন, আমার দৃষ্টিতে পার্লামেন্টই সবার ওপরে। জারদারির এ বক্তব্যে আবারও সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সরকারের টানাপড়েন তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিগত সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফের সময়ও সরকার ও আদালতের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক ছিল।

No comments

Powered by Blogger.