বোয়ালিয়া খাল ভরাট করে আবাসন প্রকল্প!

রাজধানীর খিলক্ষেত থানার ডুমনি মৌজায় বোয়ালিয়া খাল ভরাট করে গড়ে উঠছে একটি আবাসন প্রকল্প। খিলক্ষেত-ইছাপুর সড়কের দক্ষিণ দিকে রাজউকের পূর্বাচল উপশহর প্রকল্পের ৩০০ ফুট রাস্তার ওপর নির্মাণাধীন সংযোগ সেতুর পাশে প্রকল্পটির অবস্থান। গতকাল শনিবার বোয়ালিয়া খাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আট কিলোমিটার বোয়ালিয়া খালের তিন কিলোমিটারেরও বেশি অংশ ভরাট হয়ে গেছে। রাজউকের চেয়ারম্যান মো. নূরুল হুদা গতকাল বোর্ড সদস্য (উন্নয়ন)


মাহবুবুল আলমকে সঙ্গে নিয়ে এলাকা পরিদর্শনে গেলে অবৈধ ভরাটকাজ নজরে পড়ে। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে ঢাকা ওয়াসা ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে রাজউক। এই চিঠির অনুলিপি বাড্ডা ও খিলক্ষেত থানাকে দেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজউকের নগর পরিকল্পনা শাখাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
রাজউক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভরাটকাজটি করা হচ্ছে ইস্ট ওয়েস্ট ডেভেলপমেন্ট প্রপার্টির বসুন্ধরা-বারিধারা প্রকল্পের এন ব্লকের পাশে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধরার সংশ্লিষ্ট অফিসের প্রকৌশলী এম আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে খাল না কী যেন ছিল বলে শুনেছি। রাজউকের চেয়ারম্যান সাহেব আপত্তি জানানোর পর এক্সক্যাভেটর দিয়ে বালু সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করা হয়।’ খালের অংশ ভরাট করা হয়েছে কেন? জবাবে তিনি বলেন, ভরাট করা হয়নি, ভুলে ভরাট হয়ে যেতে পারে।
রাজউকের চেয়ারম্যান বলেন, ওই এলাকায় এ ধরনের কোনো প্রকল্পের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া জলাধার সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে খাল ভরাট করা হচ্ছে। তাই সরকারি যেকোনো সংস্থা থেকে জলাধার সংরক্ষণ আইনে মামলা হতে পারে।
রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বোয়ালিয়া খালের ওপর যে সেতুটি নির্মিত হচ্ছে, তার জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কিন্তু ভরাটের কারণে খালটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পুরো টাকাই পানিতে যাবে। কর্মকর্তারা জানান, ভরাটকারীদের পক্ষ থেকে রাজউককে বলা হয়েছে, এখানে সেতু নির্মাণের প্রয়োজন নেই।
গতকাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নির্মাণাধীন বোয়ালিয়া সেতুর মাত্র ১০০ মিটার দক্ষিণে ভরাটের কাজ চলছে। কিছু দূরে খালটির আর কোনো অস্তিত্ব নেই। সেখানে বিশাল বালুর মাঠ। বসুন্ধরার নিজস্ব গাড়ি এমনকি বাসও চলতে দেখা যায়। এলাকাবাসীর দাবি, কিছু দিন আগেও এখানে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত।
ভরাট করা জায়গার পশ্চিমে বসুন্ধরার আনসার ব্যারাক। অন্তত ১০টি টিনশেড পাকা স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। রাজউক জানায়, যেকোনো স্থাপনা করতে রাজউকের অনুমতির প্রয়োজন। কিন্তু অনুমোদনের জন্য আবেদনই করা হয়নি।
রাজউকের কর্মকর্তারা বলেন, গতকাল সকালে বসুন্ধরার ১০-১২ জন লোক ভরাটের কাজে সহায়তা করলেও পরে আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.