কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাট-যাত্রীবাহী জাহাজ চালু হোক

ট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌরুটের কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে যাত্রীবাহী জাহাজ ভিড়তে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ও ঝক্কি সয়ে পণ্যবাহী জাহাজে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ঘাটটির মালিকানা নিয়ে সরকারি দুটি প্রতিষ্ঠানের রশি টানাটানির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আশ্চর্যজনক হলো, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ সমস্যাটির সুরাহা করা যায়নি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করা যেন কারও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।


নৌমন্ত্রী যদিও বলেছেন, বিষয়টি তিনি সুরাহা করে ফেলবেন। কিন্তু বিরোধের হেতু ঘাটটির মালিকানা কেবল তার মন্ত্রণালয় দাবি করছে না, জেলা প্রশাসনও একই দাবি করছে। বিরোধের সঙ্গে যেহেতু দুটি মন্ত্রণালয় জড়িত তাই শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগতে পারে। প্রশ্ন হলো, এতদিন ধরে এই জাহাজ ঘাটটি নিয়ে বিরোধ জিইয়ে থাকল কী করে? মজার বিষয় হলো, ঘাটটির মালিকানা নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি না হলেও ২৮ কোটি টাকা খরচ করে জেটি নির্মাণ কিন্তু পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। বোঝা যায়, জনদাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে এ ঘাটকে যাত্রীবাহী জাহাজ ভেড়ার উপযোগী করার জন্য জেটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদ যদি এর মালিকানা নিয়ে শেষ পর্যন্ত অনড় থাকে এবং এ ব্যাপারে যদি বিচার বিভাগ হস্তক্ষেপ করে তাহলে জেটি নির্মিত হয়ে গেলেও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। তাই, নৌ মন্ত্রণালয়ের উচিত বিরোধটি জরুরি ভিত্তিতে মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া। সে জন্য প্রয়োজনবোধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া উচিত।
জেলা পরিষদ এই ঘাটে বিআইডবি্লউটিসির কোনো জাহাজ বা লঞ্চ ভিড়তে দেয় না বলে যাত্রীসাধারণের পণ্যবাহী জাহাজে চলাচল করাটা দুর্ভাগ্যজনক। অথচ যাত্রী পরিবহনের একটি বড় জাহাজ ও কয়েকটি সি-ট্রাক ওই এলাকায় অলস বসে আছে। এতে যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি যেমন হচ্ছে, তেমনি বিআইডবি্লউটিসির আয়ও বাড়ছে না। আমরা জনগণের ভোগান্তি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের আয় বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে জেটি নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটের মালিকানা বিরোধ মীমাংসা করে যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচলের বাধা দূর করার আহ্বান জানাই।

No comments

Powered by Blogger.