গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসব-আই-জিনিয়াস গ্র্যান্ডমাস্টার কলেজ ছাত্র সাদিদ আলম

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর আই-জিনিয়াস গ্র্যান্ডমাস্টার হলো গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র চৌধুরী সাদিদ আলম। ১০ জন চূড়ান্ত প্রতিযোগীর মধ্যে সেরা সাদিদ পেয়েছে এক লাখ টাকা, ক্রিস্টাল মুঠোফোনসহ একগাদা পুরস্কার। রাজধানীর বসুন্ধরায় জিপি হাউসে গতকাল শনিবার মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসবের জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার


তুলে দেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টোরে জনসন, প্রথম আলোর উপসম্পাদক আনিসুল হক, অপেরা সফটওয়্যারের প্রতিনিধি ইভান রাইতান ও কল্পনা রাজিউদ্দিন।
আই-জিনিয়াস গ্র্যান্ডমাস্টার সাদিদ সহ-আয়োজক গ্রামীণফোনের অংশীদার টেলিনরের পক্ষ থেকে নরওয়েতে শিক্ষা সফরে অংশ নেওয়ার সুযোগ, ক্রেস্ট, ক্রিস্টাল মুঠোফোন, সনদ ছাড়াও ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর তরফ থেকে পেয়েছে এক লাখ টাকা ও একটি দোয়েল ল্যাপটপ।
আই-জিনিয়াস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মুঠোফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কিছু নির্ধারিত প্রশ্নের জবাব খুঁজে বের করতে হয়।
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বাকি নয়জন প্রতিযোগী হচ্ছে রাশিদ আবিদ, হাসান হায়দার, লাইলাতুল আসিফ, লামিয়া কবির, সাদমান রাকিন, মোহাম্মদ মুনতাসীর হাসান, মাহমুদ হাসান, সুনন্দা সরকার ও লামিয়া রহমান। এই নয়জনকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে ক্রেস্ট, ক্রিস্টাল মুঠোফোন ও সনদ। আর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১০২ জনের প্রত্যেককে ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে আই-জিনিয়াসরা পুরো বছর বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ পাবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যার স্বপ্ন দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করা। তাঁর এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব তোমাদের। কারণ, তোমাদের হাতের নাগালে ইন্টারনেট রয়েছে।’
ইন্টারনেটকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানান গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টোরে জনসন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আই-জিনিয়াসদের ইন্টারনেট নিয়ে এই আগ্রহ যেন ভবিষ্যতেও থাকে। তাহলেই বাংলাদেশ পাবে মেধাবী ডিজিটাল প্রজন্ম।
প্রথম আলোর উপসম্পাদক আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ জেগে উঠবে সেদিন, যেদিন তোমরা নিজেদের গড়ে তুলবে। কারণ প্রতিটি মানুষের ভেতরেই রয়েছে একজন করে আইনস্টাইন, রবীন্দ্রনাথ, পিকাসো বা শচীন টেন্ডুলকার।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক্সেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) প্রকল্প পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সহপাঠীদের সঙ্গে জ্ঞান ভাগাভাগি করো। তবেই দেশের দ্রুত অগ্রগতি হবে।’ তিনি পরবর্তী আই-জিনিয়াস খুঁজে বের করার কাজে প্রথম আলো ও গ্রামীণফোনের সঙ্গে এটুআইকে সম্পৃক্ত করার অনুরোধ জানান।
ইন্টারনেটের মূল্যহ্রাস: মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করে এটুআইয়ের নজরুল ইসলাম খান অনুষ্ঠানে জানান, তাঁরা ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে দাম আরও কমানোর সুপারিশ করেছেন। পরে বক্তব্য দেওয়ার সময় এটুআইয়ের এই সুপারিশ মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এক মেগাবাইট ব্যান্ডউইডথের দাম ১০ হাজার থেকে কমিয়ে আট হাজার টাকা করা হচ্ছে। এ ছাড়া চলতি বছরের মার্চেই টেলিটকের মাধ্যমে থ্রি-জি (তৃতীয় প্রজন্ম) প্রযুক্তি বাজারে আনার ঘোষণা দেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ বলেন, ‘জ্ঞানের সমুদ্র থেকে যারা আঁজলাভরে নিয়মিত জ্ঞান আহরণ করে, তারাই সত্যিকারের জিনিয়াস। এখন ইন্টারনেটের কারণে দেশে-বিদেশে কোনো পাসপোর্ট-বর্ডার নেই। যে সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট থেকে জ্ঞান নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারবে, সেই হবে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান।’
স্বাগত বক্তব্যে গ্রামীণফোনের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা কাজী মনিরুল কবির বলেন, ‘ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে নিজের ভেতরের উদ্ভাবনী শক্তি জাগিয়ে তোলো। তোমাদের হাতে রয়েছে আমাদের নেতৃত্ব।’
গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসবে সারা দেশের মোট দুই লাখ প্রতিযোগীর মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয় সেরা ১০২ জনকে। গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনের প্রতিযোগিতা থেকে বাছাই করা হয় সেরা ১০ জনকে। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তাদের লিখিত ও ব্যক্তিত্বের পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.