পবিত্র কোরআনের আলো-কাফির সরদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই

৯. ইশ্তারাও বিআয়া-তিল্লা-হি ছামানান ক্বালীলান ফাসাদ্দূ আ'ন ছাবীলিহী; ইন্নাহুম ছা-আ মা কা-নূ ইয়া'লামূন।
১০. লা-ইয়ারক্বুবূনা ফী মু'মিনিন ইল্লা ওয়ালা- যিম্মাহ্; ওয়া উলা-য়িকা হুমুল মু'তাদূন। ১১. ফাইন তাবূ ওয়া আক্বা-মুস্ সালা-তা ওয়া আ-তুয্ যাকা-তা ফায়িখ্ওয়ানুকুম ফীদ্ দীন; ওয়ানুফাস্সিলুল্ আয়া-তি লিক্বাওমিন ইয়্যা'লামূন।


১২. ওয়া ইন্ নাকাছূ আইমা-নাহুম্ মিম্ বা'দি আ'হ্দিহিম ওয়া ত্বাআ'নূ ফী দীনিকুম ফাক্বা-তিলূ আয়িম্মাতাল কুফ্রি ইন্নাহুম লা আইমা-না লাহুম লাআ'ল্লাহুম ইয়ান্তাহূন। [সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ৯-১২]
অনুবাদ
৯. এরা আল্লাহর আয়াতগুলোর সামান্য বৈষয়িক স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়, আর এভাবেই তারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত করে। আসলে এরা যা করে, তা খুবই খারাপ।
১০. মুমিনদের ব্যাপারে কোনো আত্মীয়তার বন্ধন তারা স্বীকার করে না এবং কোনো অঙ্গীকারের মর্যাদাও স্বীকার করে না। তারা হচ্ছে সীমালঙ্ঘনকারী।
১১. সুতরাং তারা যদি তাওবা করে, নামাজ কায়েম করে এবং জাকাত দেয় তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই হয়ে যাবে। আমি সেসব মানুষের জন্য আমার আয়াতগুলো স্পষ্ট করে বর্ণনা করি, যারা জানতে আগ্রহী।
১২. তারা যদি চুক্তি সম্পাদন করার পর নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের ধর্মের নিন্দা করে। তবে তোমরা কাফির সরদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। কেননা তাদের জন্য আর কোনো চুক্তিই বহাল নেই। এভাবেই হয়তো তারা খারাপ কাজ থেকে বিরত হবে।

ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো ও কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ এবং তাদের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে নাজিল হয়েছে। এখানে কাফিরদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং ঘোষণার কারণগুলো বলা হয়েছে। কারণগুলো এ রকম_এ সব কাফির যেহেতু এর আগে চুক্তি ভঙ্গ করেছে সেহেতু এদের সম্পর্কে আর এমন আশা করা যায় না যে তারা নতুন কোনো চুক্তি করা হলে তা রক্ষা করবে। বরং তারা বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে এসব চুক্তির অপব্যবহার করতে পারে। তা ছাড়া মুসলিমদের প্রতি তাদের মনে যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা বিরাজ করছে, সে কারণে তাদের কাছে না কোনো আত্মীয়তার মূল্য আছে, না কোনো চুক্তির।
৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহর আয়াতগুলোকে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ তারা আল্লাহর আয়াতগুলোর অনুসরণ করার পরিবর্তে পার্থিব জীবনের বৈষয়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করছে। তারা ধর্মের মহৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় অথচ তারা পিতৃপুরুষের ধর্মের ধারক-বাহক বলে দাবি করে। আর এভাবেই তারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে।
১০ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই।
১১ নম্বর আয়াতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে কোনো ব্যক্তি খাঁটি মনে তাওবা করলে এবং ইসলাম গ্রহণ করলে মুসলমানদের উচিত তাদের সঙ্গে ভ্রাতৃসুলভ আচরণ করা এবং ইসলাম গ্রহণের আগে যেসব কষ্ট দিয়েছে তা ভুলে যাওয়া।
১২ নম্বর আয়াতে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জবাবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের একটা অর্থ এই হতে পারে যে ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ হয়ে যাওয়া। যেমন রাসুল (সা.)-এর ওফাতের পর কোনো কোনো গোত্র এ রকম করেছিল। আবার এর অর্থ এটাও হতে পারে যে, তাদের সঙ্গে লিখিত বা মৌখিক শান্তিচুক্তি হয়েছিল, কিন্তু তারা সে চুক্তি ভঙ্গ করেছে। আর এই যুদ্ধের উদ্দেশ্য সে রাজ্যচিন্তার নয় বরং মানুষকে হেদায়েতের পথে নিয়ে আশা, সেটাও এই আয়াতে স্পষ্ট হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী

No comments

Powered by Blogger.