অ্যামচেমের ভোজসভায় বাণিজ্যমন্ত্রী-দুর্নীতি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বিদেশি বিনিয়োগের বড় বাধা

দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) না আসার জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দুর্নীতিকেই বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ না আসার কারণ হিসেবে অনেকেই বলে থাকেন অবকাঠামো না থাকার কথা। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, বিদেশি বিনিয়োগ না আসার মূল কারণ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং দুর্নীতি। বিশেষ করে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া দুর্নীতি।’


আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) আয়োজিত এক ভোজসভায় বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশে ব্যবসা করার চ্যালেঞ্জ ও সুবিধা’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের বাজার উন্মুক্ত। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসার জন্য যা যা করার সরকার তা করছে। বিদ্যমান সমস্যাগুলো কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির সঙ্গে কোনো আপস করছে না। দুর্নীতিকে কোনো ছাড়ও দেওয়া হবে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি রয়েছেই। আবার জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাতে আবারও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এতে সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই মূল্যস্ফীতিকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অবশ্য কোনো একক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
জি এম কাদের আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের কারণেও দেশে কিছু পণ্যের বাজার অস্থির হয়। আর কিছু পণ্য নিয়ে কারসাজি হচ্ছে। কারসাজির বিষয়ে সরকার সজাগ আছে।
নিত্যপণ্যের বাজার ঠিক রাখতে সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি চাহিদা অনুযায়ী নিত্যপণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে। সেটা দেশে উৎপাদন করে হোক কিংবা বিদেশ থেকে আমদানি করে হোক। খাদ্যের যেন কোনো ঘাটতি না থাকে, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি যেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেখতে হয়, তাই একটু এদিক-সেদিক হলেই মন্ত্রণালয়কে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। সে কারণে খুব বেশি দিন কেউ বাণিজ্যমন্ত্রী থাকতে পারেন না। অতীত ইতিহাসও তা-ই বলে।’
আমেরিকান চেম্বারের সভাপতি আফতাবুল ইসলাম বলেন, অপর্যাপ্ত রাজস্ব সম্পদ, সরকারের ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং তা মোকাবিলায় ব্যাংক থেকে অনেক বেশি ঋণ নেওয়ার কারণে সরকারের রাজস্ব ও মুদ্রানীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
অ্যামচেমের সভাপতি বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া দেশে দুই অঙ্কের মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এটিও উদ্বেগের বিষয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা ও অ্যামচেমের নির্বাহী পরিচালক আবদুল গফুর।

No comments

Powered by Blogger.