এক্সেসরিস-নাকফুলের বাহার

বিন্দুসম নাকফুল নারীর সৌন্দর্যে পূর্ণতা আনে। ক্ষুদ্র এই গহনা ইদানীং তরুণীদের ফ্যাশন ট্রেন্ড। নানা ঢঙের আর রঙের নাকফুলের বাহার নিয়ে লিখেছেন জান্নাতুল এ্যানি নাকফুলের প্রতি দুর্বলতা প্রায় সব মেয়েরই। হাজারো গয়নার মধ্যে এই ক্ষুদ্র গয়নার অস্তিত্ব সেই প্রাচীনকাল থেকে। তবে তখন নাকফুল হিসেবে হাঁড়ের খণ্ডবিশেষ ব্যবহার করা হতো।


কালের বিবর্তনে নাকফুল তৈরিতে হাড়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে সোনা, রুপা আর ইমিটেশন। একটা সময় ছিল যখন গা-ভর্তি গয়নার প্রচলন ছিল। এতসব ভারী গয়নার মধ্যে ছোট নাকফুলটি যেন নারীর সৌন্দর্যে পূর্ণতা এনে দিত। মুসলিম সমাজে বিয়ে হলে নারীরা নাকফুল পরত বিয়ের চিহ্ন হিসেবে। একজন বিবাহিত নারীকে আরও বেশি সুন্দর করে তোলে এই নাকফুল। নাকফুল শুধু বিবাহিত নারীর জন্য_ এক সময় আমাদের দেশে এ ধারণার প্রচলন ছিল। আজ তা ভ্রান্ত ধারণা হিসেবে প্রমাণিত। বর্তমানে তরুণীরা ফ্যাশনের একটি অংশ হিসেবে নাকফুল ব্যবহার করছে। তবে তারা বড় নাকফুলের পরিবর্তে বেছে নিচ্ছে পিনের মতো নোজপিন। বিবাহিত, অবিবাহিত, কিশোরী থেকে তরুণীসহ প্রায় সবাই এই সামাজিক রীতিকে ফ্যাশনের অন্তর্ভুক্ত করেছে। অন্যান্য অনুষঙ্গের চেয়ে ফ্যাশনেবল নাকফুলের প্রতি তরুণীদের আকর্ষণ বেশি। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, জিন্স-ফতুয়া, এমনকি স্কার্ট-টপসের সঙ্গেও নাকফুল পরে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিচ্ছে বর্তমান তরুণীরা। তবে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বাঁ নাকে নাকফুল পরার ট্রেডিশনে পরিবর্তন এসেছে। এখন অনেকে চেহারায় ভিন্ন লুক আনার জন্য ডান নাকে নাকফুল পরছে। নাকফুলের সৌন্দর্য এর আকৃতির ওপর নির্ভর করছে। আকৃতি খুব বেশি বড় হলে ভালো লাগে না। ছোট নাকফুলগুলো সোনা, রুপা, হীরা, মুক্তা ও ইমিটেশনের হয়ে থাকে। নাকফুলের ওপর গোলাকার, চৌকোনা, তারা ও ত্রিভুজ আকৃতির বিভিন্ন রঙের পাথর বসানো থাকে। সাধারণ পাথর ছাড়াও পাওয়া যায় রুবি, পান্না, চুনি, এডিসহ নানা পাথরের নাকফুল। অনেক নাকফুলে পাথরের জায়গায় হীরা ও মুক্তা বসানো থাকে। সাদা পাথর, মুক্তা অথবা হীরা বসানো নাকফুলগুলো মানিয়ে যায় যে কোনো পোশাকের সঙ্গে। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নাকফুল পরলেও আকর্ষণীয় লাগবে।
দরদাম : সোনার নাকফুল পাওয়া যাবে ৮০০ থেকে ২,০০০ টাকার মধ্যে, সোনার ওপর মুক্তা বসানো ৭০০ থেকে ১,২০০ টাকা, সোনার ওপর পাথর বসানো ৮০০ থেকে ১,৫০০ টাকা, সোনায় হীরা বসানো ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা, রুপার নাকফুলের দাম কিছুটা কম_ ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুপার ওপর মুক্তা বসানো ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, হোয়াইট গোল্ডের নাকফুল ৬,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা। ইমিটেশনের নাকফুলের দাম পড়বে ৫০ থেকে ২০০ টাকা। টিপ নাকফুল পাবেন ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।
যেখানে পাবেন : সোনা ও হীরার নাকফুলের খোঁজ পাবেন জুয়েলারির দোকানগুলোতে। বসুন্ধরা শপিং মল, বায়তুল মোকাররম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, আড়ং,
চকবাজার, চাঁদনীচকে পাবেন সব ধরনের ও ডিজাইনের নাকফুল।


টিপস
নাক ফোড়ানোর একটি নির্দিষ্ট স্থান থাকে। ওপর-নিচ হলে সৌন্দর্যের হানি হয়।
দক্ষ হাতে বা পার্লারে গিয়ে নাক ফোড়ানো উচিত।
অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে নাক ফোড়ানোর পর টক জাতীয় খাবার_ বেগুন, গরুর মাংস এসব খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার বেশি খেলে নাক ফোড়ানোর ঘা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
নাকের ধরন অনুযায়ী নাকফুল বাছাই করা উচিত।
নাক ফোড়ানো না থাকলে টিপ নাকফুল পরতে পারেন।
ইমিটেশনের নাকফুল ভিজলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
তবে ইমিটেশনের মাল্টিকালার যুক্ত পাথরের নাকফুল সহজে নষ্ট হয় না।

No comments

Powered by Blogger.