এবার সৌদি আরবকে সতর্ক করেছে ইরান

সৌদি আরবকে এবার সরাসরি সতর্ক করে দিয়েছে ইরান। তেহরান বলেছে, তাদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ঘাটতি পূরণে সৌদি আরবের তেল উত্তোলনের প্রতিশ্রুতি মোটেই ‘বন্ধুত্বসুলভ’ নয়। ইতিমধ্যে ইরান মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে অতিরিক্ত তেল উত্তোলনের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। তেহরান বলেছে, তাদের তেলের ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের পরিণতি ভালো হবে না।


ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি আকবর সালেহি গতকাল মঙ্গলবার দেশটির আরব টেলিভিশন চ্যানেল আল আলমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এ কথা বলেন। এদিকে প্রয়োজনে ইরানের ওপর সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না যুক্তরাজ্য।
সম্প্রতি সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী আলি আল-নাইমি সিএনএনকে বলেন, রিয়াদ দিনে অতিরিক্ত ২৬ লাখ ব্যারেল (সমপরিমাণ তেল ইরান রপ্তানি করে) তেল উত্তোলন করতে পারে। ইরান হরমুজপ্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার যে হুমকি দিয়েছে, তা বিশ্ব সম্প্রদায় মেনে নেবে না।
সৌদি মন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এসব বক্তব্য বন্ধুত্বসুলভ নয়।’ তিনি বলেন, ‘পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা একটা সমন্বিত নিরাপত্তা এবং এ ক্ষেত্রে ইরান বড় ভূমিকাই পালন করছে।’
এদিকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ স্কাই নিউজকে ইরানের সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ না করে বলেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অগ্রগতি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় ইরানের ব্যাপারে সব ধরনের বিকল্পই ভাবা হচ্ছে।
হেগ বলেন, ‘আমরা কখনোই কোনো ধরনের বিকল্প উড়িয়ে দিইনি। আবার কোনো ব্যাপারে সমর্থনও করিনি। আমরা মনে করি, সব ধরনের বিকল্প নিয়েই আলোচনা হতে পারে এবং এভাবেই ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যেতে পারে।’
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্য সামরিক অভিযানের ব্যাপারে সুপারিশ না করলেও তেহরানকে আলোচনার টেবিলে আনতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।
অন্যদিকে ইরানের হরমুজপ্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার বলেন, কানাডা থেকে টেক্সাসে কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইন চালুর বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র পুনর্বিবেচনা করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, কোনিট সঠিক সিদ্ধান্ত হবে, তা এখন স্পষ্ট...কেবল অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দিক দিয়েই নয়, জ্বালানি নিরাপত্তার দিক দিয়েও এই পাইপলাইন চালু করাটা গুরুত্বপূর্ণ।’
গত নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই পাইপলাইন অনুমোদনের বিষয়টি ২০১২ সালের নির্বাচন পর্যন্ত স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন। কিন্তু কংগ্রেস এ পাইপলাইন চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ শ্রমিক ইউনিয়ন এই প্রকল্প সমর্থন করলেও পরিবেশবাদীরা বলছেন, কানাডা থেকে যে অপরিশোধিত তেল যুক্তরাষ্ট্রে আসবে, তাতে কার্বন নিগর্মন হবে। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.