চিকিৎসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী-দায়িত্বে অবহেলা করলে কঠোর ব্যবস্থা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেসব চিকিৎসক দায়িত্বে অবহেলা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, জনগণকে সেবা দিতে সব চিকিৎসককে তাদের কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে।গতকাল মঙ্গলবার নবনির্মিত শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, তার সরকার স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পেঁৗছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কারণ এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার।শেখ হাসিনা বলেন, 'কে ক্ষমতায় যাবে, আর কে যাবে না, তা জনগণই নির্ধারণ করবে। তবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের সেবা করা।'স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে চিকিৎসা গবেষণা সম্প্রসারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীর খিলগাঁও এবং কুর্মিটোলায় ৫শ' শয্যার দুটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে।সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ৩৭৫ থেকে ৮৫০-এ উন্নীত করার প্রক্রিয়া চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ হাসপাতালে একটি পূর্ণাঙ্গ ইমার্জেন্সি ও ক্যাজুয়ালটি বিভাগ চালু রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণে অনুদান দিতে এগিয়ে আসার জন্য বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সম্প্রসারণে অর্থদানের ওপর কর রেয়াত সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন জারির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন।তিনি আরও বলেন, সরকার বন্ধ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালু করেছে এবং বর্তমানে সারাদেশে এ ধরনের ১১ হাজার ক্লিনিক চালু রয়েছে।অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. মুজিবুর রহমান ফকির ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হুমায়ুন কবির অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।চিকিৎসাসেবা পেশাকে মহৎ পেশা হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের আন্তরিকতা ও সদাচরণ একজন রোগীর অর্ধেক রোগ উপশম করতে পারে। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা আন্তরিক হলে স্বল্প সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমেও রোগীদের অধিক সেবা দিতে পারেন।পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা শিশু হাসপাতালের ১০ তলা নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং চাইল্ড কার্ডিয়াক সার্জারি ও কার্ডিয়াক ক্যাথ ল্যাবসহ শিশু হৃদরোগ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।তিনি শিশুদের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ হিসেবে উলেল্গখ করে বলেন, স্বাস্থ্যবান ও নীরোগ জাতি গঠনে চিকিৎসকদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা দেশের অধিকতর উন্নয়নে সহায়তা করবে।দেশে প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ হাজার শিশু হৃদরোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে_ এ কথা উলেল্গখ করে তিনি বলেন, চাইল্ড কার্ডিয়াক সার্জারি ও কার্ডিয়াক ক্যাথ ল্যাব অনাকাঙ্ক্ষিত শিশুমৃত্যু হ্রাসে সহায়ক হবে।শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার শিশু কল্যাণে জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ প্রণয়ন এবং তাদের সেবার জন্য সারাদেশে ৪২টি ডে কেয়ার সেন্টার চালু করেছে।প্রধানমন্ত্রী শিশু হাসপাতালকে অন্যতম সেরা হাসপাতাল হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, হাসপাতাল সম্প্রসারণ, শিশু হৃদরোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা এবং গাজীপুর ও রাজশাহীতে নতুন শাখা চালু হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসার মান ও সুযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।গ্যাস প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করার প্রতিশ্রুতি শেভরনেরযুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তেল ও গ্যাস কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশে তাদের গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করার অঙ্গীকার করেছে। ঢাকায় সফরকারী যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন এশিয়া প্যাসিফিক এক্সপেল্গারেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানির প্রেসিডেন্ট মেলোডি মেয়ার গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিগত তার সরকারের সময়ে গ্যাস বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। এ খাতে শেভরনের মতো বড় কোম্পানি আসায় প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ প্রকাশ করেন।তিনি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে আরও ব্যাপক আকারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ ওয়াহিদ উজ জামান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.