টিপাইমুখ বাঁধ : উৎকণ্ঠায় জকিগঞ্জের হাজারো মানুষ by এম আবদুল্লাহ আল মামুন,

'হুনছি বারত না কিতা তারার নদীত বান (বাঁধ) দিয়া আমরার পানি আটকাইয়া পালাইব। হাছাই যুদি ই বান অয় তাইলে আমরার সর্বনাশ অইব। গাঙ্গের পানি হুকাই যাইব, মাছ পাইতাম নায়। কেত (ক্ষেত) কিষি করমু কেমনে? হুরুতাইন লইয়া কাইমু কেমনে?' এভাবেই ভারতের টিপাইমুখ বাঁধ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানান কুশিয়ারা তীরবর্তী শস্যকুঁড়ি গ্রামের কৃষক আবদুর রউফ। বাংলাদেশের মানুষের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও জকিগঞ্জ সীমান্তের ওজানে সুরমা-


কুশিয়ারার উৎস মুখ বরাক নদে সর্বনাশী বাঁধ নির্মাণের খবরে কৃষক আবদুর রউফের মতো সুরমা-কুশিয়ারা পারের অধিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষক, জেলে থেকে শুরু করে জকিগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শঙ্কিত।
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ভারত কী করছে, সে সম্পর্কে আগে পরিষ্কার হতে হবে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করলে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু টিপাইমুখ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভাটিতে ফুলবাড়িয়ায় কৃষির জন্য আরেকটি বাঁধ দিতে চাচ্ছে। সেটি আমাদের জন্য মহাবিপর্যয়ের কারণ হবে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে।' জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাবি্বর আহমদ বলেন, 'বাঁধের চুক্তি সম্পর্কে ভারতের নীরবতাই আমাদের উদ্বেগের কারণ। বিষয়টি নিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই।'
উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ লস্কর বলেন, 'বাঁধ হলে সুরমা-কুশিয়ারার স্রোতধারা শুকিয়ে যাবে। হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল, নদী-খাল, পুকুর, দীঘির পানি কমে যাবে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাবে। ফলে বৃহত্তর সিলেট মেঘনার অববাহিকার বিরাট অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে।'
 

No comments

Powered by Blogger.