শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কাগজের চালান আনছে সিন্ডিকেট

কটি সংঘবদ্ধ অসাধু চক্র বন্ড সুবিধায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সাদা কাগজসহ বাণিজ্যিক আর্ট পেপার আমদানি করে দেশি কাগজ শিল্পের বাজার অস্থির করে তুলছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস গত দুই সপ্তাহে এমন দুটি বৃহৎ চালান আটক করে জরিমানাসহ প্রায় এক কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে।কাস্টম হাউসের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, শুল্ক ফাঁকি দেওয়া সংঘবদ্ধ চক্রটিকে বাঁচাতে নানা পর্যায়ে তদবিরেরও অন্ত নেই। গত মাসের শেষ দিকে ঢাকার দুটি প্রতিষ্ঠানকে এমন শুল্ক ফাঁকির তৎপরতার জন্য চিহ্নিত করেছে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। শুল্ক গোয়েন্দা শাখার সুপারিনটেনডেন্ট জসিম উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে জানান, শুল্ক ফাঁকির এমন অপচেষ্টা রোধে সজাগ রয়েছে কাস্টম।


আলোচ্য দুটি চালানের সম্পূর্ণ কায়িক পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন অ্যাপ্রাইজার আবুল হাশেম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্ডের শূন্য শুল্ক সুবিধা নিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় এমন চালান আমদানিকারকদের অপচেষ্টার কারণে একদিকে যেমন সরকারের রাজস্ব ফাঁকির ঝুঁকি রয়েছে, একই সঙ্গে এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অসম প্রতিযোগিতায় পড়েছেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।
কাস্টমের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, বেপরোয়া হয়ে ওঠা চক্রটি শুল্ক ফাঁকি দিতে গিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় হৃদরোগে ব্যবহৃত ইসিজি (ইলেকট্রো-কার্ডিওগ্রাম) কাগজের নামে সাদা কাগজও আমদানি করছে।
চট্টগ্রামে সম্প্রতি যে দুটি চালান ধরা পড়ে সেগুলো হলো ৩০০ জিএসএম ঘোষণা দিয়ে বন্ডের আওতায় শূন্য শুল্কের সুযোগ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য আনা শুল্কসংবলিত ২৬০ জিএসএম কাগজের চালান। এর একটি ঢাকার ওয়ারির মেট্রো প্রিন্টিং প্যাকেজিং এঙ্সেরিজ লিমিটেডের, অন্যটি নীলা প্যাকেজিংয়ের। এ দুটি চালান নিয়ে আপত্তি উঠলে কায়িক পরীক্ষায় শুল্ক ফাঁকির প্রচেষ্টা প্রমাণিত হয়।
কাস্টমস কর্মকর্তা আবুল হাশেম এক প্রশ্নের জবাবে জানান, ৪৯ শতাংশ শুল্কের এ চালান শূন্য শুল্কে আনা হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি ধরা পড়লে মেট্রো প্রিন্টিংকে আট লাখ টাকা জরিমানাসহ ৩৬ লাখ টাকা এবং নীলা প্যাকেজিংকে প্রায় ৯ লাখ টাকা জরিমানাসহ ৫১ লাখ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হয়।
শুল্ক বিভাগের দায়িত্বশীলরা জানান, সাধারণত ১৫০ জিএসএমের বেশি হলে তা দিয়ে আর্ট কার্ড, গিফট বক্স, ভিজিটিং কার্ডসহ সমমানের পণ্য উৎপাদন করা যায়। ১৫০ জিএসএমের কম হলে সে কাগজ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খোলাবাজারে ব্যাপক বিক্রি হয়। আর এ ক্ষেত্রে বন্ড-সুবিধা নিয়ে শূন্য শুল্কে চালান এনে অসাধু ব্যক্তিরা বাণিজ্যিকভাবে প্রকৃত আমদানিকারকদের তথা সার্বিকভাবে দেশের ক্ষতি করছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি এনবিআরসহ কাস্টম কর্তৃপক্ষের কাছে কার্যকর পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন।

No comments

Powered by Blogger.