অ্যাঙ্গোলার এক তরুণকে ঘিরে বিভক্ত ডাচ্ সমাজ

১৮ বছর বয়সী এক অ্যাঙ্গোলান তরুণকে কেন্দ্র করে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছে নেদারল্যান্ডের রাজনৈতিক অঙ্গন। মওরো ম্যানুয়েল নামের ওই আশ্রয়প্রার্থীকে থাকতে দেওয়া উচিত কি না, এ প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত দেশের নেতারা। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে মওরোর পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হয়েছে।
মওরোর যখন ১০ বছর বয়স, তখন তাঁর মা তাঁকে নেদারল্যান্ডগামী একটি বিমানে উঠিয়ে দেন। তাঁর ভয় ছিল, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ছেলের ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার।
নেদারল্যান্ডে পৌঁছানোর পর মওরোকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। পরে তাঁর ঠাঁই হয় এক ডাচ্ পালক বাবা-মায়ের ঘরে। সেই থেকে আট বছরে মওরো উন্নত দেশটির সুযোগ-সুবিধায় বেড়ে উঠেছেন। ডাচ্ ভাষা তাঁর মুখে ফোটে খইয়ের মতোই। কিন্তু এখন আর তিনি শিশুটি নন বলে নেদারল্যান্ডের আইন অনুযায়ী তাঁকে দেশটি ছেড়ে যেতে হবে।
মওরোর ঘটনাটি ক্রমশ দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে। তিনি এখন রীতিমতো পরিচিত মুখ। অনেকেই বলছেন, ছেলেটি ডাচ্ সমাজের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছেন যে তাঁকে বের করে দেওয়াটা হবে অন্যায়।
অন্যদিকে একই রকম অবস্থা বিভিন্ন দেশের ৭৫টি শিশুর। তারাও বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে লড়ছে। ডাচ্ সরকার বলছে, মওরোকে একা থাকতে দেওয়া হলে তা হবে কাউকে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার নামান্তর। মওরোকে স্থায়ীভাবে নেদারল্যান্ডে থাকার অনুমতি দিতে গত মঙ্গলবার ডাচ্ পার্লামেন্টে দুটি প্রস্তাব তোলা হয়। কিন্তু দুটিই ভোটে হেরে যায়। আগামী সপ্তাহে একটি সমঝোতা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হতে পারে, যাতে মওরো তাঁর ছাত্র ভিসার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে কি না, তা দেখা পর্যন্ত দেশটিতে থাকতে পারেন।
গত সপ্তাহে ডাচ্ অভিবাসন ও আশ্রয়দানবিষয়ক মন্ত্রী জার্ড লিয়ার্স ঘোষণা করেন, মওরোর আর নেদারল্যান্ডে থাকার অধিকার নেই। অভিবাসনবিরোধী দল ফ্রিডম পার্টির (পিভিভি) নেতা গিয়ার্ট ভিল্ডার্স মওরোকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.