ভারতে চাপের মুখে ইউপিএ সরকার-জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মনমোহন

ভারতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চাপে রয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। তুমুল আক্রমণে বিরোধীরাও। মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের কাছে আরও বড় সমস্যা, শরিক দলগুলোও আর অসন্তোষ চেপে রাখছে না। অবস্থা এমন, একটি জনস্বার্থ মামলার সুবাদে কেরালা হাইকোর্টও এবার মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আদালত বলছেন, বারবার এভাবে পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিনিয়ন্ত্রণের দোহাই দিয়ে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার হাত ধুয়ে ফেলতে পারে না। বাধ্য হয়ে কেরালার কংগ্রেস পরিচালিত সরকার বাড়তি দামের ওপর রাজ্যের প্রাপ্য শুল্ক না নিয়ে খানিকটা রেহাই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবস্থা যা, মনমোহন সিংয়ের ওপর চাপ বাড়ছেই।


এ অবস্থায় পেট্রোলের দাম সরকার বাড়ায়নি, বাড়িয়েছে তেল কোম্পানিগুলো যুক্তি দেওয়া কংগ্রেসকেও বিব্রত দেখাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে শনিবার রাতে দলের প্রবীণ মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। দিলি্লর খবর, এই বৈঠকে হাজির থাকার জন্য অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জিকে কলকাতা থেকে দিলি্লতে আসতে বলা হয়েছে। মনমোহন সিং প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারেন বলেও কংগ্রেসের একটা মহল থেকে বলা হচ্ছে। ফলে শেষ পর্যন্ত কী হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দোলাচলে কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের মত, মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসার কথা না বললেও এনসিপি বা কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্স বা ডিএমকেও ক্ষুব্ধ। সবার বক্তব্য, এভাবে বারবার জ্বালানির দাম বাড়ায় ভুগছে সাধারণ মানুষ। ডিএমকের লোকসভার নেতা টিআর বালু বলছেন, 'আমরা একেবারেই খুশি নই। এই সিদ্ধান্ত সময়োচিত নয়, প্রত্যাহার করতে হবে।' ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লাহ নিজে কেন্দ্রে মন্ত্রী। তার বক্তব্য, 'মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকে আমরা এ নিয়ে কথা বলব।' এনসিপি, শারদ পাওয়ারের দলের নেতা তারিক আনোয়ার বলেছেন, 'আমরা উদ্বিগ্ন। এভাবে বারবার পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।' বাধ্য হয়ে কেরালার কংগ্রেস নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী উমেন চণ্ডীও বলছেন, 'পেট্রোলের দামের ওপর নিয়ন্ত্রণ আবার সরকারের হাতে নেওয়া উচিত।' বিরোধী সিপিএম বলছে, 'বাজারের হাতে দামের ব্যাপারটা ছেড়ে দেওয়ার ভাঁওতা এখন ধরা পড়ে গেছে। হালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যথেষ্ট কমেছে। তবুও ভারতে দাম বাড়ছে। গরিব মানুষের যন্ত্রণা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের। সারাদেশে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা হবে। ওদিকে বিজেপি বলছে, 'এদেশে জ্বালানির দাম যেভাবে বাড়ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সেভাবে বাড়ছে না। আসল কথাটা হলো পরিচালনার সমস্যা। মনমোহন সরকারের পরিচালনগত সমস্যার কারণেই এসব হচ্ছে।'

No comments

Powered by Blogger.