জিংকের অভাবে অটিজম

যেসব শিশুর শরীরে জিংকের পরিমাণ কম তাদের অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। জাপানের টোকিওর একদল গবেষক সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য পেয়েছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাদের শরীরে জিংকের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। নতুন এ তথ্য অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন।সম্প্রতি সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, গবেষকদল প্রায় দুই হাজার অটিস্টিক শিশুর শরীরে জিংকের মাত্রা পরিমাপ করে।


এতে দেখা যায়, জিংকের ঘাটতি এবং শিশুদের অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণায় কম বয়সী শিশুদের মধ্যে জিংকের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। তিন বছরের বেশি বয়সী অর্ধেকের কম ছেলেশিশু এবং অর্ধেকের বেশি মেয়েশিশুর মধ্যে জিংকের মাত্রা ছিল কম। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অটিজমে আক্রান্ত এক-তৃতীয়াংশ শিশুর শরীরে জিংকের ব্যাপক ঘাটতি দেখা গেছে। এমনকি দুই বছর বয়সী এক ছেলেশিশুর শরীরে প্রত্যাশিত মাত্রার ১২ ভাগের এক ভাগ জিংক ছিল।
গবেষকরা বলেছেন, এতে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, নবজাতকদের শারীরিক বৃদ্ধির জন্য প্রচুর পরিমাণে জিংকের প্রয়োজন। আর শিশুদের জিংকের ঘাটতি হলে অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। সাধারণত মাংস, রুটি ও দুগ্ধজাত খাবারে জিংক পাওয়া যায়।
তবে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জিংকই যে অটিজমে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ তা এখনই জোর দিয়ে বলা যাবে না। আর এখনই সবাইকে অধিক পরিমাণে সম্পূরক জিংক (ট্যাবলেট) গ্রহণ করাও ঠিক হবে না।
যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে একজন অটিজম ও এ-সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হয়। গত ৩০ বছরে এ সংখ্যা ১০ গুণ বেড়েছে। এ রোগের কারণ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি।
টোকিওর গবেষকদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক উটা ফ্রিথ বলেছেন, এ গবেষণার অনেক দুর্বলতা রয়েছে। তিনি বলেন, শরীরে কম জিংক থাকা যেমন বিপজ্জনক তেমনি বেশি থাকাও ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য সম্পূরক জিংক গ্রহণ করলে বিষক্রিয়াসহ অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র : ডেইলি মেইল অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.