বেশি বন্ধু মানে বড় মস্তিষ্ক

ত দিন জানা ছিল, যার বন্ধু বেশি তার হৃদয় বড়। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, শুধু হৃদয় নয়, বন্ধুর সংখ্যা বেশি থাকলে নাকি মস্তিষ্ক অর্থাৎ ঘিলুও বড় হয়। গবেষণাটা অবশ্য হয়েছে বানরের ওপর। তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, মানুষের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই রকম হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।অঙ্ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গবেষক আদিম জাতের ম্যাকাক বানরের ওপর গবেষণা চালিয়ে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেন। বানরের এই প্রজাতিটি গহিন বনে দলবদ্ধভাবে বাস করে।

গবেষকদলটির প্রধান জেরোমি স্যালেট জানান, ২৩টি ম্যাকাক বানরকে তাঁরা গবেষণার জন্য নির্বাচন করেন। এদের মধ্যে একটিকে দল থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করা হয়। আর অন্যগুলোকে দুই থেকে সাতটি পর্যন্ত একসঙ্গে রেখে কয়েকটি উপদলে বিভক্ত করা হয়। এভাবে তাদের রাখা হয় ১৫ মাস। এরপর গবেষকরা বানরদের মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যান করে দেখেছেন, বড় দলে থাকা বানরগুলোর প্রত্যেকটির মস্তিষ্কের একটি বড় অংশজুড়ে ছিল ধূসর রঙ। অন্যগুলোর মস্তিষ্কে এই রঙটির পরিমাণ এমআরআই রিপোর্টে কম লক্ষ করা গেছে।
গবেষকদের ধারণা, পরস্পরের সঙ্গে অনেক বেশি সামাজিক সংযোগ রক্ষা করায় এদের মস্তিষ্কের একটি উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে ধূসর রঙের অস্তিত্ব ছিল। আর এগুলো ছিল সামাজিক তথ্যে ঠাসা। এরা দলের সবার মুখ চেনে, প্রত্যেককে আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে এবং তাদের খোঁজখবর রাখে। পরস্পরের এই চেনাজানা থেকে প্রতীয়মান হয়, তাদের বন্ধুর সংখ্যা বিশাল। মস্তিষ্কের বিশেষ অংশ সুনির্দিষ্টভাবে এসব তথ্য সংরক্ষণ না করলে পরস্পরকে এভাবে চেনা ও শনাক্ত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হতো না।
বানরের ক্ষেত্রে পাওয়া বন্ধুত্বের এই পরিধির সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্বের তুলনা কি সম্ভব? গবেষকদের ধারণা সম্ভব। বিশেষ করে ইন্টারনেটের বিশেষ কিছু ওয়েবসাইট যেমন ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহারকারীদের বন্ধুর সংখ্যা অনেক বেশি হয়। এত এত বন্ধুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে এবং তাদের প্রত্যেককে চেহারা-ছবি দেখে শনাক্ত করতে পারলে গবেষকদের ধারণা, মানুষের মস্তিষ্কেরও কিছু অংশ বৃদ্ধি পাবে, আর তা ভরে যাবে বন্ধুদের খোঁজখবরের তথ্যসহ সামাজিক যাবতীয় তথ্যে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা থেকেও নাকি এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সূত্র : টেলিগ্রাফ অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.