মমতা ব্যানার্জির বালা ছিনতাই-উদ্দেশ্য ছিল হত্যা! by সুব্রত আচার্য্য,

শ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে হত্যার 'চেষ্টা' হয়েছে। গত বুধবার উত্তর চবি্বশ পরগনায় এক অনুষ্ঠান শেষে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে করমর্দন করতে গিয়ে মমতা নিজেকে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেন। নিরাপত্তাকর্মীদের ত্বরিত তৎপরতায় মুখ্যমন্ত্রী রক্ষা পেলেও খোয়া গেছে তাঁর হাতের বালা। বারাসাতের এমপি ও মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ রাজনীতিক বলে পরিচিত ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদার দাবি করেছেন, সিপিএমের মহিলা শাখার সন্ত্রাসীচক্র এর সঙ্গে জড়িত।
গত বুধবার দুপুরে উত্তর চবি্বশ পরগনার উন্নয়ন নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা ব্যানার্জি।


বৈঠক শেষে কলকাতায় ফেরার পথে দলীয় সমর্থক ভেবে মমতা গাড়ি থেকে নেমে তাদের সঙ্গে করমর্দন করতে যান। সে সময় কিছু মহিলা 'সমর্থক' মমতার পা ছুঁয়ে প্রণাম করার ভঙ্গি করে নেত্রীর দুই পা জাপটে ধরেন। মুহূর্তেই ভারসাম্য হারান মমতা। অবশ্য নিরাপত্তারক্ষীরা মাটিতে পড়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে ধরে ফেলেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী তাঁর গাড়িতে চড়ে দেখেন তাঁর হাতের ঘড়ি ও বালা নেই। এক নিরাপত্তারক্ষী সেই সময় ঘড়িটি উদ্ধার করলেও মায়ের আশীর্বাদস্বরূপ দেওয়া বালার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক পত্রিকা ছবিসহ মুখ্যমন্ত্রীর পড়ে যাওয়া এবং বালা-ঘড়ির ছিনতাই হওয়ার খবর প্রকাশ করে। এরপর সারা দিন এই ঘটনা রাজ্যের মানুষের মুখে মুখে ফেরে। মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে বালা ছনিতাইয়ের ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে মমতার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়েও।
এ নিয়ে গতকাল কয়েক দফা চেষ্টার পর রাতে টেলিফোনে বারাসাতের এমপি ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার সঙ্গে যুক্ত সিপিএমের মহিলা শাখার সন্ত্রাসীচক্র। স্থানীয় সিপিএমের নেতা গৌতম মণ্ডলের বোন প্রীতি মণ্ডল খুনের চেষ্টা করেছিল। পুলিশ তাকে খুঁজছে।
বারাসাত এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি নিজেও লজ্জিত বলে জানান ওই এমপি। বলেন, এর পেছনে গভীর চক্রান্ত রয়েছে। পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর বালা ছিনতাই বা হারিয়ে যাওয়া- যাই হোক না কেন, পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য উদ্ধার করবেই।
এদিকে এত বড় ঘটনার পরও গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ চবি্বশ পরগনার উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক শেষে একইভাবে জনতার মধ্যে হেঁটে কমর্দন করেন মমতা। পুলিশের শীর্ষ মহল গোটা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার সতর্ক করলেও তিনি আমলে নিচ্ছেন না। এ নিয়ে গভীর চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তা দেওয়া বিভিন্ন সংস্থা।
সুন্দরবন ট্যুরিজম জোন : সুন্দরবন অঞ্চলে আন্তর্জাতিক ট্যুরিজম জোন করতে বাংলাদেশ ও ভুটানের সঙ্গে কথা বলতে চান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল দক্ষিণ চবি্বশ পরগনার উন্নয়ন শীর্ষক প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্য সচিব সমর ঘোষকে তিনি এই কথা বলেন। এ সময় ওই জেলার শাসক, মহকুমা শাসক ছাড়াও পুলিশ সুপার এবং জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সুন্দরবনকে বাঁচাতে একসঙ্গে কাজ করব আমরা। সুন্দরবনকে সামনে রেখে এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্যুরিজম সেন্টার তৈরি করা হবে।'
রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল কালের কণ্ঠকে জানান, আগামী ১১ নভেম্বরের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সপ্তম প্রাকৃতিক আশ্চর্য নির্বাচনে সুন্দরবনকে ভোট দেবেন। তিনি প্রশাসনের সবাইকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বানও জানাবেন।

No comments

Powered by Blogger.